কেউ হঠাৎ ভয় দেখালে, কোনো কিছু দেখে অবাক হলে কিংবা চমকপ্রদ কোনো ঘটনা ঘটলে আমাদের মুখ হা হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে হাত দুটিও নিজের অজান্তে মুখের ওপর চলে আসে। দুই হাতে মুখ ঢেকে ফেলেন অনেকে। এমনটি হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে অনেকেই মজা করে বলেন, ‘প্রাণ যেন শরীর থেকে বেরিয়ে না যায়, তাই। অনেকে আবার সত্যিই এমনটা বিশ্বাস করেন।
এই প্রতিক্রিয়ার মজার একটি নামও আছে তা হলো, ‘মন্দ শুনব না, মন্দ কথা বলব না, মন্দ কিছু দেখব না’। প্রাথমিকভাবে প্রবৃত্তিগত মনে হলেও জেনে অবাক হবেন যে এটি আসলে একটি শেখানো আচরণ।
ছোটবেলা থেকেই আমাদের ভদ্রতার অনেক পাঠ পড়ানো ও শেখানো হয়। মুখ পুরো খুলে খাবার চিবানো যাবে না, হাই তুললে মুখে হাত দিতে হবে, হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ ঢাকতে হবে ইত্যাদি। মানে, হা করা মুখ দেখানো যাবে না। বয়স বাড়তে বাড়তে এই আচরণগুলো মানুষ রপ্তও করে ফেলে।
মুখ হা হলেই তা হাত দিয়ে ঢেকে দেওয়ার এ প্রতিক্রিয়াটি আসলে ছোটবেলায় সেই ভদ্রতার পাঠ শিখতে শিখতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া স্বভাবগুলোর একটি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুকাল থেকে মানুষদের দেখে দেখে শেখা একটি আচরণ। তাই যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় মুখ হা হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই হাত মুখের ওপর চলে আসে।
বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ আবার ভিন্ন মতামতও দিয়েছেন। তাঁদের একজন যুক্তরাজ্যের আইনজীবী স্টিফেন ল্যস্কার।
তিনি বলেন, ‘বিপদে পড়লে, ভীত বা আতঙ্কিত হলে কিংবা অনেক বেশি অবাক হয়ে গেলে মুখ দিয়ে হঠাৎ কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত চিৎকার বা শব্দ যেন বেরিয়ে না যায়, সে জন্য হাত দিয়ে মুখ ঢাকে মানুষ।’
এই প্রতিক্রিয়া শুধু নারীদের মধ্যেই দেখা যায় বলে দাবি করেন অস্ট্রেলিয়ার নিবন্ধিত সার্ভেয়ার এবং নগর পরিকল্পনাবিদ রন্ডি ওরথিংটন। তাঁর কথা, ‘সবার মধ্যে এই প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না, পুরুষদের মধ্যে তো একেবারেই নয়।’