সারাদিনের ক্লান্তি কাটানোর উপযুক্ত চাবিকাঠি ঘুম। অনেকেই ঘুমাতে ভারোবাসেন বলে নানান কটাক্ষের শিকার হন! তবে জানেন কি স্রেফ পর্যাপ্ত ঘুমালে কেটে যায় বহু ধরনের শারীরিক জটিলতা? বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রতিদিব ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার নিশ্চিন্তের ঘুম প্রয়োজন প্রত্যেকের। ঘুমের ফলে একাধিক শারীরিক সমস্যা যেমন কেটে যায়, তেমনই নতুন উদ্যমে একটি দিন শুরু করা যায়। কাজে আসে মন, শরীর থাকে চনমনে।
বিশেষজ্ঞদের মতে ঘুমের উপযুক্ত সময় থেকে ৩০ মিনিট দেরি হলেও শারীরিক বহু ক্ষতি হতে পারে। ঘুমের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে মন-মেজাজ, ক্লান্তিভাব ও সেক্স ড্রাইভের মতো দিক।
গবেষণার পরিসংখ্যান বলছে, ৭১ হাজার মানুষ প্রতিদিন ঘুমের অভাবে দুর্ঘটনার শিকার হন, তাদের মধ্যে দেড় হাজারের বেশি মারা যান এই কারণে।
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের গুরুগ্রামের ফর্টিস হাসপাতালের নিউরোলজি ডিপার্টমেন্টের প্রবীণ গুপ্তা জানালেন, ঘুম সময়মতো না হলে কী কী বিপদ ঘটে যেতে পারে।
বন্ধ্যাত্ব
প্রবীণ গুপ্তা বলেছেন, ‘অপর্যাপ্ত ঘুম হরমন উৎপাদনকে প্রভাবিত করে। গ্রোথ হরমন ও টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন প্রভাবিত হয়। বাড়তি ‘স্ট্রেস হরমন’ বের হতেও সাহায্য করে ঘুম। আর তা প্রভাবিত করে উর্বরতাকে।’ ফলে ঘুম না হলে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা প্রভাবিত হতে পারে।
অসুস্থ হতে পারেন!
পর্যাপ্ত সময় ধরে যদি ঘুম না হয়, তাহলে বহু ধরনের সমস্যা দানা বাঁধতে পারে। ঘুমের ফলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মুক্তি দেয় ও ঘুম না হলে ইনফ্লেমেশন বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার কমতি দেখা যেতে পারে। অসুস্থতার সম্ভাবনা বাড়ে।
মেদ বাড়াতে পারে অপর্যাপ্ত ঘুম
দিনে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা টানা ঘুম না হলে মেদ বেড়ে যেতে পারে। যে হরমোনগুলো খিদে নিয়ন্ত্রণ করে, সেই হরমোনে প্রভাব ফেলে অপর্যাপ্ত ঘুম। এ ছাড়া অপর্যাপ্ত ঘুমের জেরে অস্বাভাবিক ইনসুলিন মুক্তি পায়। এতে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া বাড়ে মেদ।
হার্ট অ্যাটাক
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঘুম পর্যাপ্ত না হলে, রক্তচাপ বা সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এতে কার্ডিওভ্যাসকুলার জটিলতা বেড়ে যায়। । ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে যায়।
কেন ঘুম হয় না?
-অনেকেরই কাজের চাপে বা টেনশনে হয় না ঘুম। ফলে বেড়ে যায় সমস্যা।
-আবহাওয়াগত অস্বস্তি ও আওয়াজ, কম ঘুমের কারণ।
-ঘুমের সময় অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার ঘুম কমিয়ে দেয়।
– অবসাদের মতো সমস্যা কমিয়ে দেয় ঘুম।
চিকিৎসক প্রবীণ গুপ্তা বলেছেন, কাউন্সেলিং করে ঘুমের সমস্যা অনেকেই কাটাতে পারেন। তবে ঘরোয়াভাবে মেডিটেশন খুবই সাহায্য করে থাকে এই সমস্যা থেকে বের হতে। এ ছাড়া ঘুমের আগে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। তাতে আসে আরামের একটানা ঘুম।