আমাদের শরীরের কাঠামো, হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ক্যালসিয়াম। অথচ হাড়ের যত্নের বিষয়ে আমরা বেশিরভাগ মানুষই খুব উদাসীন বা তেমনভাবে কিছুই জানি না। বাচ্চাদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রেও এই খনিজ প্রয়োজনীয়। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করলে তবেই বাচ্চাদের হাড় এবং দাঁত হবে মজবুত।
এদিকে ক্যালসিয়ামের বড় উৎস হলো দুধ। সেজন্যই প্রত্যেক শিশুর বেড়ে ওঠার সময় তাদের ডায়েটে এই খনিজ থাকা প্রয়োজনীয়। তবে ল্যাকটোজে অ্যালার্জি রয়েছে অনেক বাচ্চার। সে কারণে দুধ খেলেই বমি হয়ে যায় বা হজমের সমস্যা দেখা যায় অনেক বাচ্চার মধ্যেই। ফলে দুধ থেকে ক্যালসিয়ামসহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি সংগ্রহ করতে পারে না তারা।
তাই ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য দুধের বিকল্পের খোঁজ করতেই হয় মায়েদের। জেনে রাখা ভালো, দুধ ছাড়াও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ প্রচুর খাবার রয়েছে। বাচ্চার ল্যাকটোজে অ্যালার্জি থাকলে সেসব খাবার দিয়েই তাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে পারেন। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটায় যেসব খাবার সেগুলো আমাদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখা উচিত।
জেনে নিন খাদ্য তালিকা—
চিয়া বীজ: একাধিক পুষ্টিগুণে ঠাসা চিয়া বীজ। সেই কারণেই এখন সুপারফুডের তকমা কুড়িয়ে নিয়েছে এই ছোট্ট ধূসর বীজ। একদিকে ক্যালসিয়ামের খনি চিয়া বীজ। ২ টেবিল চামচ চিয়া বীজ থেকে মোটামুটিভাবে ১৭৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাবেন আপনি। এছাড়াও চিয়া বীজে রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্কের মতো খনিজ। এতে হদিশ মেলে ভিটামিন বি১, বি৩, ফাইবার এবং প্রোটিনের। তাই এক কথায় সন্তানের ডায়েটে নিয়মিত এই বীজ রাখলে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ তো হবেই। সঙ্গে মিলবে আরও বেশ কিছু উপকারিতা। তাই চিয়া পুদিং দিয়েই সন্তানের পেট ভরাতে পারেন।
পোস্ত: পোস্ততেও ভরে ভরে রয়েছে ক্যালশিয়াম। ১ টেবিল চামচ অর্থাৎ ৯ গ্রাম পোস্ত থেকে ১২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাবে আপনার সন্তান। তাই দুধ না খেলেও পোস্ত থাকলে ডায়েটে আপনার সন্তানের দেহে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ হবে। ফলে হাড় ও দাঁত হবে মজবুত। সেক্ষেত্রে মাঝেমধ্যেই পোস্তর কোনও পদ সন্তানকে খেতে দিতে পারেন।
এদিকে সাদা তিলেও কিন্তু ক্যালশিয়াম রয়েছে ভরে ভরে। এছাড়াও এর থেকে পাবেন কপার, আয়রন এবং ম্যাঙ্গানিজ। তাই সন্তানকে তিলের নাড়ু খাওয়ালেও কিন্তু ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ হবে। আর সন্তানও থাকবে খুশি।
আমন্ড: দুধ ছাড়া আমন্ড থেকেও ক্যালসিয়াম সংগ্রহ করতে পারে আপনার সন্তান। আমন্ডে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ভিটামিন ই। এতে রয়েছে হেলদি ফ্যাট এবং প্রোটিনও। তাই সন্তানকে প্রতিদিন আমন্ড খাওয়ালে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি তো পূরণ হবেই, সঙ্গে মিলবে একাধিক উপকারও।
তাজা শাক-সবজি: দুধে ল্যাকটোজ থাকায় সহ্য হয় না সন্তানের? তাহলে তার পাতে অবশ্যই রাখুন তাজা শাক-সবজি। পালং শাক অবশ্যই ভুললে চলবে না। এতে ভরপুর রয়েছে ক্যালসিয়াম সহ অন্যান্য খনিজ। তাই সন্তানের হাড় মজবুত করতে হলে এসব খাবার দিয়েই তাদের পেট ভরাতে হবে।