বিভিন্ন সমস্যার লক্ষণ হতে পারে হাত কাঁপা। এটা দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অবস্থার কারণ বা উপসর্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। পারকিনসন’স রোগ, বহুমুখী ধমনীর সমস্যা, হাইপারথায়রয়েডিজম, উদ্বেগ, অ্যালকোহলের প্রভাব ইত্যাদি কারণে এমনটা হয়ে থাকে।
উদ্বেগ
কোলকাতার আনন্দপুরের ‘ফোর্টিস হাসপাতাল’য়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা সঞ্জয় গর্গ টাইমসঅফইন্ডিয়া ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “উদ্বেগ শরীরের প্রতিরক্ষামূলক বা প্রতিরক্ষার প্রক্রিয়ার ওপরে প্রভাব রাখে। রক্তচাপ বৃদ্ধির সাথে সাথে দেহের অ্যাড্রিনালিনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা হৃদস্পন্দনকে ত্বরান্বিত করে এবং পেশিতে কম্পন ও ঝাঁকুনি সৃষ্টি করে।”
রক্তে শর্করার মাত্রা কম
রক্তে কম শর্করা বা ‘হাইপোগ্লাইসেমিয়া’ ঝাঁকুনির সৃষ্টি করে। বিশেষ করে যেসকল ডায়াবেটিস রোগী ইন্সুলিন বা ওষুধ গ্রহণ করেন।
সাধারণত, রক্তে শর্করার মাত্রা প্রতি লিটারে চার মি.লি.মোলস কম হলে, ক্ষুধা পেলে এবং অতিরিক্ত ঘাম হলে কাঁপুনি বা ঝাকুনির সমস্যা দেখা দেয়।
হাইপারথায়রয়েডিজম
ডা. গর্গের মতে, “হাইপোথায়রয়েডিজম এমন একটা অবস্থা যেখানে থায়রয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত হরমোন উৎপাদন করে।”
এই রোগের অন্যতম লক্ষণ হল ঝাঁকুনি যা হাত ও আঙ্গুলে বেশি ফুটে ওঠে।
অত্যাবশ্যকীয় কম্পন
ডা. গর্গ বলেন, “এটা একটা স্নায়ুবিক ত্রুটি যা হাত, মাথা, কন্ঠস্বর এবং কখনও কখনও দেহের অন্যান্য অংশে ছন্দময় কাঁপুনি সৃষ্টি করে। বয়স্কদের মধ্যে হাত কাঁপা সবচেয়ে সাধারণ কারণ। যা প্রধানত বয়স চল্লিশের পর থেকে দেখা দেয়। অত্যাবশ্যকীয় কম্পন অন্যান্য স্নায়ুবিক লক্ষণ হতে পারে যেমন- ‘অ্যাটাক্সিয়া’।”
পারকিনসন’স রোগ
এটা ক্রমবর্ধমান স্নায়ুবিক রোগ যার প্রাথমিক লক্ষণ হল কাঁপুনি। সাধারণত হাত থেকে শুরু হয়। আর দেহের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
সাধারণত, একটা হাত থেকে শুরু হয়ে অন্য হাতেও হয়। তারপর দেহের অন্যান্য অঙ্গেও কাঁপনি দেখা দেয়।
মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস
এই রোগের একটা লক্ষণ হল কাঁপুনি। এটা বিকাশ লাভের সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে পেশী সংকুচিত হয় তারপর শিথীল হয়। এই সময়ে ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়।
এই ঝাঁকুনি ব্যক্তির চলাফেরা, খাওয়া ও পান করার ক্ষমতার ওপরে প্রভাব রাখে। এই লক্ষণ স্নায়ুবিক ক্ষয়ের ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়।
অনেকের এর ফলে একা হাঁটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। অনেকের আবার ভিন্ন লক্ষণও দেখা দেয়।