বর্তমানে চুলের সমস্যায় নারী-পুরুষ সবাইকে ভুগতে হয়। বিভিন্ন বাজারজাত তেল ব্যবহার করে চুলের যত্ন করেও পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে পণ্যে ভেজাল থাকার সম্ভাবনাকেও অগ্রাহ্য করা যায় না। এসব সমস্যার সমাধান হিসেবে ধ্রুবক হয়ে আছে ঘরোয়া উপায়। বিভিন্ন কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ তেল এখন ঘরে বসে খুব সহজেই তৈরি করা যায়। যেমন নারকেল তেলও ঘরে বানিয়ে নিতে পারেন।
নারকেল তেল কেবল চুলের যত্নেই নয়, রূপচর্চার পাশাপাশি রান্নায়ও কিন্তু ব্যবহার করতে পারেন। তেল বানিয়ে অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারবেন।
জেনে নিন কীভাবে তৈরি করবেন নারকেল তেল-
মাঝারি আকৃতির দুটি নারকেল নিয়ে কুড়িয়ে নিন। কোড়ানো নারকেল সামান্য পানি দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করুণ। চাইলে পাটায় বেটেও নেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে বাটার পর তারপর গরম পানির সঙ্গে মেশাবেন নারকেলের পেস্ট। ব্লেন্ড করার পর নারকেলের মিশ্রণ ছেঁকে নিন। হাতের সাহায্যে চেপে চেপে সবটুকু পানি বের করে আবারও ব্লেন্ডারে এক থেকে দেড় কাপ পানি দিয়ে ব্লেন্ড করুন। একইভাবে আবার ছেঁকে নারকেলের অবশিষ্ট অংশ ফেলে দিন।
নারিকেল থেকে যে পানিটা বের হয়েছে সেটা একটি প্যানে নিন। প্যান চুলায় দিয়ে মাঝারি আঁচে নাড়তে থাকুন। পানি শুকিয়ে গেলে তেল বের হতে শুরু করবে। তেল বের হলে চুলা বন্ধ করে দিতে হবে। ঠান্ডা হয়ে গেলে ছেঁকে কাচের পরিষ্কার বোতলে নিয়ে নিন তেল। এবার ইচ্ছেমতো ব্যবহার করুন খাঁটি নারকেল তেল। ভেজাজমুক্ত নারিকেল তেল আমাদের চুলকে মজবুত করে।
এরপর চাইলে এই তেলকে চুলের জন্য পুষ্টিগুণসম্পন্ন করতে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যেমন- পেয়াঁজ, অ্যালোভেরা, জবা ফুল, আমলকি, কারিপাতা, নিমপাতা, মেথি মিশিয়ে নিতে পারেন।
যে কারণে এসব উপাদান ব্যবহার করবেন:
- পেয়াঁজ চুল পড়া কমায় ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে
- অ্যালোভেরা চুলের খুশকির সমস্যা দূর করে ও চুল মসৃণ রাখে
- জবা ফুল চুল পড়া কমায়
- আমলকী চুলে পুষ্টি জোগায় ও গোড়া থেকে চুলকে মজবুত করে
- কারি পাতা চুলের খুশকি দূর করে চুলকে মজবুত করে
- নিমপাতা মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখে ও চুলকানির সমস্যা নিরাময় করে
- মেথি চুলকে উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যসম্মত ও চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।
ঘরে তেল বানানোর জন্য উল্লিখিত সব উপাদান একসঙ্গে ব্যবহার করা যায় আবার আলাদা করেও ব্যবহার করা যায়।
যেভাবে এ উপাদানগুলো তেলে যোগ করবেন:
চুলায় পাত্র গরম করে পরিমাণমতো নারকেল তেল দিয়ে নিন। নারকেল তেল হালকা গরম হয়ে এলে সব কটি বা কয়েকটি উপাদান এক এক করে দিয়ে অল্প আঁচে নাড়তে থাকুন। যতক্ষণ পর্যন্ত সব কটি উপাদানে ভাজা ভাজা ভাব না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত নেড়ে তেলটি বানাতে হবে। এরপর চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে ছেঁকে নিতে হবে।
এ তেল অবশ্যই কাচের পাত্রে সংগ্রহ করতে হবে। নিয়মিত এ তেল ব্যবহারে চুলের পরিবর্তন লক্ষ করতে পারবেন।