আপনি একজন কম্পিউটার ব্যবহারকারী, কিন্তু আজও কি-বোর্ড না দেখে টাইপ করতে পারেন না? এমন অদক্ষতা ছাপিয়ে রপ্ত করে নিন দ্রুত টাইপিংয়ের কৌশল। পাঠকের জন্য আজ কিছু টিপস বাতলে দেব, যার মাধ্যমে আপনি দ্রুত টাইপ করতে পারবেন। রইল বিস্তারিত…
কম্পিউটারে টাইপ করার কিছু নিয়ম আছে। সেই নিয়ম মেনে টাইপিং করলে দ্রুত টাইপিং সম্ভব। সংক্ষেপে যদি দ্রুত টাইপ করার ‘গোপন রহস্য’ প্রকাশ করতে বলা হয়, তবে মনে রাখতে হবে যে এর জন্য আসলে তেমন কোনো সংক্ষিপ্ত পথ নেই। তবে কিছু পথ আছে, যার মাধ্যমে টাইপ করার দক্ষতাকে নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে বাড়িয়ে নেওয়া যায়। হাতের ১০ আঙুল ব্যবহার করে কি-বোর্ড না দেখে মনিটরে তাকিয়ে টাইপ করার কৌশলকে বলা হয় টাচ টাইপিং। যা রপ্ত করতে পারলেই আপনিও হয়ে উঠবেন একজন দক্ষ টাইপার।
টাইপিংয়ের গতি বাড়ানোর প্রধান শর্ত- কোনো আঙুল দিয়ে কোনো অক্ষর লিখবেন, তা জানা। কি-বোর্ডের ওপর ঠিকমতো হাত না রাখার ফলে দ্রুত টাইপ করা যায় না। ভুলভাবে কি-বোর্ডের ওপর হাত রাখার ভুলটিই বেশি দেখা যায়। তাই কি-বোর্ডে আঙুল রাখার নিয়মটি মনে রাখতে পারেন। আপনি যদি প্রতিটি অক্ষরের জন্য এক বা একাধিক আঙুল ব্যবহার করেন, তবে টাইপ করতে দেরি হবে। আর তাই কি-বোর্ডে হাত দুটো এমনভাবে রাখতে হবে যেন আপনার দুই বৃদ্ধাঙ্গুলি স্পেস বারের ঠিক মাঝে থাকে। এরপর কি-বোর্ড অক্ষর যেখান থেকে শুরু হয়েছে, সেগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করতে হবে। প্রথমে কিউ ( Q) থেকে সারি, দ্বিতীয় এ (A) থেকে সারি এবং তৃতীয় জেড (Z) থেকে সারি।
অনুশীলন দ্বিতীয় সারি থেকে শুরু করতে হবে। এ জন্য আপনার বাঁ হাতের কনিষ্ঠ আঙুল দ্বিতীয় সারির এ (A)-এর ওপর, অনামিকা এস (S)-এর ওপর, মধ্যমা ডি (D)-এর ওপর, তর্জনী এফ (F)-এর ওপর রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, তর্জনী দিয়ে জি (G) অক্ষরও টাইপ করতে হবে। এরপর ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল সেমিকোলনের (;) ওপর, অনামিকা এল (L)-এর ওপর, মধ্যমা কে (K)-এর ওপর, তর্জনী জে (J)-এর ওপর। এখানেও তর্জনী দিয়ে এইচ (H) অক্ষর টাইপ করতে হবে। আঙুলগুলো কি-বোর্ডের অক্ষরগুলোর ওপর রেখে টাইপ করতে হবে।
অনুশীলনের সময় মনে রাখতে হবে, বাঁয়ে কোনো অক্ষর টাইপ করার পর স্পেস চাপতে হলে ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ব্যবহার করতে হবে। ঠিক একইভাবে ডানে কোনো অক্ষর টাইপ করার পর বাঁ পাশের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে স্পেস চাপতে হবে। ওপরের অক্ষরগুলো দ্রুত লিখতে পারলে বারবার স্পেস ব্যবহার করে (a s d f g; l k j h) টাইপ করতে হবে। একই সঙ্গে শিফট অক্ষর ব্যবহারের জন্য (A S D F G: L K J H) লেখাগুলো অনুশীলন করতে হবে। ছোট-বড় অক্ষর টাইপ করার সময় বাঁয়ের কোনো শব্দ বড় অক্ষরে (ক্যাপিটাল ওয়ার্ড) লিখতে হলে তখন ডান পাশের শিফট চাপতে হবে। ঠিক একইভাবে ডানে বড় অক্ষর লেখার জন্য বাঁ পাশের শিফট নির্বাচন করতে হবে। এবার কিউ অক্ষর থেকে (qwertpoiuy), এ থেকে (asdfglkjh) এবং জেড থেকে (zxcvmnb) লিখতে হবে। এরপর নিচের দিক থেকে অক্ষরগুলো পুনরায় লিখতে হবে। এভাবে বারবার অনুশীলন করলে কি-বোর্ডের সব অক্ষরের ওপর আপনার আঙুল সমানভাবে কাজ করবে। এভাবে অক্ষরগুলো লেখার পর স্পেস বা শিফট বাটন ব্যবহার করে টাইপিংয়ের অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে।
অনুশীলনের সময় কি-বোর্ডের দিকে তাকিয়ে লিখলেও ধীরে ধীরে তাকানো বন্ধ করে দিতে হবে। এভাবে লেখায় দক্ষতা অর্জনের পর যে কোনো বইয়ের লেখা দেখে দ্রুত টাইপ করতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে চেষ্টা করুন মনিটরের দিকে না তাকিয়ে টাইপ করতে। তবেই আপনার টাইপের গতি বাড়তে থাকবে।
এসবের বাইরেও কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিত। সেসবের মধ্যে পরিবেশগত দিক হলো বিবেচ্য বিষয়। যেমন-
* দ্রুত টাইপ করার জন্য চাই উপযোগী ও স্বস্তিকর জায়গা। খোলামেলা ও আরামদায়ক জায়গা হলে দ্রুত টাইপ করতে সুবিধা হয়।
* দ্রুত টাইপ করার জন্য ঠিক হয়ে বসা জরুরি। সোজা হয়ে বসে কবজি যাতে কি-বোর্ড বরাবর থাকে, এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে আঙুল কিগুলো ঠিকমতো চালাতে পারবে। বেশি ঝুঁকে টাইপ না করাই ভালো।
* দ্রুত টাইপ শেখার জন্য অনুশীলনের বিকল্প নেই। যত টাইপ করবেন, তত দ্রুত ও নির্ভুল টাইপ করা শিখে যাবেন। তবে এ জন্য ধৈর্য থাকতে হবে।