ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রেম করে বিয়ে করা স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ৪০ কেজি দুধ দিয়ে গোসল করেছেন সিরাজ শেখ নামে এক যুবক। দুধ দিয়ে গোসল করে নিজেকে শুদ্ধ করে মহান আল্লাহ‘র নিকট শুকরিয়া আদায় করেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বাইখির চৌরাস্তা এলাকায় এ দৃশ্য দেখা গেছে। দুধ দিয়ে গোসলের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সিরাজ শেখ বাইখির গ্রামের মজিবর শেখের ছেলে । পেশায় তিনি একজন অটোরিকশা মেকানিক।
জানা যায়, সিরাজ শেখ প্রেম করে একই এলাকার আফসার শেখের মেয়ে ইতি বেগমকে (২৮) বিয়ে করেন। ১৩ বছরের সংসার জীবনে তাদের ১১ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। স্ত্রী ইতি বেগম একটি ফিজিওথেরাপি সেন্টারে কাজ করেন বলে জানা গেছে।
কিন্তু সংসার জীবনের সুখ তাদের সয়নি। স্ত্রীর বেপরোয়া চলাফেরার কারণে হঠাৎ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। ইউনিয়ন পরিষদেও এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়। উভয়ে একে অপরের নামে দুই বছর আগে মামলা করেন। স্বামী-স্ত্রীর ছাড়াছাড়ির মধ্য দিয়ে চলতি মাসের ৯ মে মামলার নিস্পত্তি হয়। মামলা নিস্পত্তি করতে সিরাজ শেখের প্রায় ১৪ লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে। মামলা নিস্পত্তি হলে এবং স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হলে তিনি এক মন দুধ দিয়ে গোসল করবেন এবং ওমরাহ হজ্জ পালন করবেন বলে এক বছর আগে তিনি নিয়ত করেন।
এ ব্যাপারে মো. সিরাজ শেখ বলেন, বিয়ের পর কয়েক বছর সুখে শান্তিতে ঘর সংসার করছিলাম। তারপর হঠাৎ করেই স্ত্রীর আচরণ পরিবর্তন হতে শুরু করে। ক্রমান্বয়ে অশান্তি বাড়তে থাকে সংসারে। স্ত্রী আমার নামে মামলা মোকদ্দমা করে হয়রানি করতে থাকে। মামলা চলার এক পর্যায়ে নিয়ত করি স্ত্রীর হাত থেকে মুক্তি পেলে এক মন দুধ দিয়ে গোসল করবো এবং ওমরাহ হজ্জপালন করবো। প্রথম পর্যায়ে দুধ দিয়ে গোসল করে নিয়ত পূর্ণ করলাম।
চতুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সিরাজ শেখ ছেলে হিসেবে ভাল কিন্তু তার স্ত্রী বেশি একটা সুবিধার না। তাদের বিষয়ে একাধিকবার শালিস করা হয়েছে। পরে উভয়েই আদালতে মামলা করলে তাদের বিচ্ছেদে হয়ে যায়।
সিরাজ শেখ-ইতি বেগম দম্পত্তির বিচ্ছেদের বিষয়টি ও একমন দুধ দিয়ে গোসলের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর জেলা পরিষদ সদস্য হাসান শিকদার জানান, আমি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসার পর জানতে পারলাম সিরাজ পূর্বের নিয়ত মোতাবেক একমন দুধ দিয়ে গোসল করেছে। এর আগে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ হয়।