চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার দক্ষিণ চাঁদপুর থেকে হালিম (৩০) নামের এক যুবককে নেশাদ্রব্য পান অবস্থায় গ্রেফতার করে পুলিশ। সে কী ধরনের নেশাদ্রব্য পান করেছেন তা নিশ্চিত করার জন্য দামুড়হুদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কোনো পরীক্ষা না করে অ্যালকোহল পান করেছে বলে রিপোর্ট দিলেন ডাক্তার হুমায়রা নারগিস।
শনিবার বিকাল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হালিম দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুরের গ্যাং কোয়াটারপাড়ার মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে। রাতেই তার বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মাদক আইনে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় দর্শনা হল্ট স্টেশন চত্বরে হালিম নামের একজন নেশাদ্রব্য পান করে মাতলামো করছে- এমন খবর পেয়ে হালিমকে নেশাদ্রব্য পান অবস্থায় আটক করা হয়। সে কোন ধরনের নেশাদ্রব্য পান করেছে পরীক্ষার জন্য দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার হুমায়রা নার্গিস হালিমের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয় আসামি কী নেশাদ্রব্য পান করেছে। কথা শুনে তিনি অ্যালকোহল পান করেছে বলে প্রেসক্রিপশন করে তাকে চিকিৎসা প্রদান করে পাঠিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অনুমতি দিলেও জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার হুমায়রা নার্গিস সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলবে না বলে জানিয়ে দেন। কীভাবে পরীক্ষা না করে অ্যালকোহল পান করেছে এমন প্রেসক্রিপশন দিলেন- জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলে জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, আমি স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। আপনি আমার স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।
এ ব্যাপারে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার হুমায়রা নার্গিস অ্যালকোহলের গন্ধ হালিমের মুখে পেয়ে তিনি জানতে পেরেছেন সে অ্যালকোহল পান করেছে। পরীক্ষা না করে কীভাবে বুঝলেন অ্যালকোহল পান করেছে প্রশ্নে তিনি বলেন, আসলে হাসপাতালে অ্যালকোহল পরীক্ষার কোনো যন্ত্রপাতি নাই। যার কারণে আমাদের গন্ধ শুকে অ্যালকোহলের রিপোর্ট করতে হয়।
পুলিশ ও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী জানা গেছে, ডাক্তার হুমায়রা নার্গিস হালিমের কথা শুনে স্বীকারোক্তি ও গন্ধ পেয়ে সে অ্যালকোহল পান করেছে বলে রিপোর্ট দিয়েছে। কিন্তু প্রেসক্রিপশনে হালিমের নাম লিখেছেন আলিম অ্যালকোহল পান করেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হোক। আলিম হাসপাতালে ভর্তি হতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তিনি তাকে প্রেসক্রিপশন করে ছাড়পত্র দেন। পরে পুলিশ আবার প্রেসক্রিপশন নিয়ে বলেন ম্যাডাম ওর নাম তো হালিম আপনি তো লিখেছেন আলিম- এটা ঠিক করে দেন। তখন উনি কেটে প্রেসক্রিপশনে লিখলেন হালিম; অথচ তিনি হালিমের কথা শুনেই অ্যালকোহল পান করেছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে দর্শনা থানার ওসি তদন্ত সামসুদ্দেহা বলেন, হালিমকে নেশাদ্রব্য পান অবস্থায় আটক করা হয়। সে কি ধরনের নেশাদ্রব্য পান করেছে তার রিপোর্ট করতে দামুড়হুদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত ডাক্তার অ্যালকোহল পান করেছে বলে রিপোর্ট দেন। আমরা থানায় মাদক আইনে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেছি। রোববার সকালে তাকে চুয়াডাঙ্গা আদালতে প্রেরণ করা হবে।