এবার ছেলের বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী। এখন ওই বিয়ের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় চরম অশান্তি বিরাজ করছে তার পরিবারে। কয়েক মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাঈদ মেহেদীর দ্বিতীয় বিয়ের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়।
তবে ওই সময় সাঈদ মেহেদী দ্বিতীয় বিয়ের কথা অস্বীকার করলেও এখন তা স্বীকার করেছেন। এছাড়া সাঈদ মেহেদীর দ্বিতীয় বিয়ের কথা তার প্রথম স্ত্রীও সাংবাদিকদের সাথে স্বীকার করেছেন।
বর্তমানে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সরকারি কোয়ার্টারে অবস্থান করছেন দ্বিতীয় স্ত্রী। দ্বিতীয় স্ত্রী তাহমিনা আক্তার মিনা ছিলেন সাঈদ মেহেদীর প্রথম স্ত্রীর ছেলে অনিক মেহেদীর বান্ধবী। ২০১৮ সালে মৌতলা শিমুরেজা এমপি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন মিনা ও অনিক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কালিগঞ্জের মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময় হতে মৌতলা গ্রামের মাজেদের মেয়ে তহমিনা আক্তার মিনার সাথে সখ্যতা ও পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সাঈদ মেহেদীর। এরপর ইউনিয়ন পরিষদে মিনাকে চাকুরীও দেন তিনি। এরপর মিনা সাঈদ মেহেদীর দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ফাঁদে ফেলে সাঈদ মেহেদীকে বিয়ে করেন। বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে সাঈদ মেহেদী তখন সম্মানের ভয়ে অস্বীকার করেন।
আরো জানা যায়, ২০১৩ সালে আবাসিক হোটেলে লাবনী নামে সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয় উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর বিরুদ্ধে। ওই মামলা কোর্টে এখনও চলমান রয়েছে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যানের কোয়ার্টারে দ্বিতীয় স্ত্রী মিনা অবস্থান করছে। তবে দ্বিতীয় বিয়ে করায় তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে বিরোধ শুরু হলে কোয়ার্টারে দ্বিতীয় স্ত্রী মিনাকে নিয়ে বসবাস করছেন। তবে গত কয়েক মাস যাবত উপজেলা চেয়ারম্যানের কোয়ার্টারের ভিতরে মারপিট ও অকথ্য ভাষায় গালাগালির শব্দ শোনা যায়। মাঝে মাঝে প্রথম স্ত্রীর সাথে দেখা করতে যাওয়ার কারণে দ্বিতীয় স্ত্রী মিনার সাথে ঝামেলা হয় বলে ওই সূত্রটি জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রথম স্ত্রী লাভলী পারভীন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে চাকুরী করার সুযোগে মিনা আমার স্বামীকে ট্রাপে ফেলে বিয়ে করেছে। প্রথমে চেয়ারম্যান অস্বীকার করলেও এখন স্বীকার করে। এখনও পর্যন্ত সে চেয়ারম্যানকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়। চেয়ারম্যানকে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে দেয়না। ফলে বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যানের কোয়ার্টারে তাকে নিয়ে থাকছে। আমি প্রথম স্ত্রী তবে দ্বিতীয় বিয়ে করার আগে আমার অনুমতি নেওয়া হয়নি। আমি এর প্রতিকার চাই।
এ বিষয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী তাহমিনা আক্তার মিনার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করে কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী বলেন, ‘আমি তাকে ৪ বছর আগে বিয়ে করেছি।’
কোয়ার্টারে মারপিট ও গালিগালাজ এর বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান ‘পারিবারিক বিষয়ে আমি আপনার সাথে কোন কথা বলতে ইচ্ছুক না বলে মোবাইলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।’