যশোরের কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়েছিলেন জেলার নতুন দায়িত্ব পাওয়া পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাসুদ আলম। ছদ্মবেশে থাকা এসপির কাছ থেকে জিডি করার জন্য ৫০০ টাকা চায় পুলিশ। তিনি সেই টাকা না দেওয়ায় ডিজি করতে পারেননি।
পুলিশ সুপার কার্যালয় জানিয়েছে, গত সোমবার যশোরে যোগ দেন এসপি মো. মাসুদ আলম। এর আগে তিনি মাদারীপুরে কর্মরত ছিলেন।
এসপির দায়িত্ব নিয়ে পরের দিন মঙ্গলবার সকালে বাইসাইকেল চালিয়ে প্রথমে জেলা প্রশাসকের বাংলোয় যান। সেখানে কর্মরত গার্ড পুলিশ তাকে জেলা প্রশাসকের পারমিশন ছাড়া ঢুকতে দেননি। তিনি সেখান থেকে যান ট্রাফিক অফিসে। সেখানে কাউকে না পেয়ে চলে যান চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়িতে। ফাঁড়ির গেট দীর্ঘক্ষণ ঝাঁকাঝাঁকি করেন। কিন্তু কেউ গেট খুলতে আসেননি।
পরে এসপি চলে যান কোতোয়ালি মডেল থানায়। ডিউটি অফিসারের রুমে ঢুকে একটা মোবাইল হারিয়ে গেছে মর্মে জিডি করতে চান। কিন্তু জিডি হবে না বলে তাকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে ডিউটি অফিসার একজনকে দেখিয়ে দিয়ে বলেন, জিডি করতে হলে ৫০০ টাকা লাগবে। তখন তিনি বলেন, ‘আমার কাছে ৫০০ টাকা নেই, আছে মাত্র ২০০ টাকা।’ কিন্তু ২০০ টাকা ফেরত দিয়ে বলা হয়, ‘৫০০ টাকা নিয়ে আসেন। নয় তো জিডি হবে না।’
জিডি না করে মাসুদ আলম সাইকেল চালিয়ে চলে যান পুলিশ লাইনে। সেখানে কামাল নামে তার এক বন্ধু আছে উল্লেখ করে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে চান। গার্ড তাকে ভেতরে যেতে দেন। তিনি ব্যারাকে গিয়ে অনেকের সঙ্গে আলাপ করে সেখানকার সার্বিক অবস্থা জানার চেষ্টা করেন।
গত বুধবার পুরো বিষয়টি জানাজানি হলে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে এ নিয়ে চলে আশাব্যঞ্জক আলোচনা। ওই দিন বিকেলে নিজ কার্যালয়ে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন যশোরের এসপি মাসুদ আলম। এ সময় তিনি যশোরে সাম্প্রতিককালের বড় সমস্যা কিশোর গ্যাং নির্মূল, যানজট নিরসনসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন বলে উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকদের এসপি জানান, সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের লক্ষ্যে নিজ পরিচয় গোপন করে তিনি বিভিন্ন দপ্তরে খোঁজখবর নিতে গিয়েছিলেন। ন্যায়, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।