নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) যশোর জেলা শাখার আয়োজনে মরহুমা জাহানারা কাঞ্চনের ২৭তম মৃত্যবাষিক উপলক্ষে ২৭ অক্টোবর দুপুর ১২টায় এক স্মরণসভা সভাও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।নিসচা,যশোর জেলা কমিটির সভাপতি মোঃসাদেকুর রহমান অাজাদ এর সভাপতিত্বে স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব এস এম আজাদ হোসেন। প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন, নিসচা, যশোর জেলার উপদেষ্টা সনামধন্য চিকিৎসক ডাঃএস এম মাহমুদুর রহমান রিজভি। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা হাজী ডাঃ এফ এম গফুর, উপদেষ্টা কবি ও অভিনেতা জনাব মোঃ সেলিম রেজা। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব এম,তারাজুল ইসলাম, মোঃ এস এম তানসেন রেজা, মোঃমাহবুব হাসান মুকুল, মোঃফজলুর রহমান। সভাটি পরিচালনা করেন সংগঠনের জেলা সাধারন সম্পাদক শেখ আকবর হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব এস এম আজাদ হোসেন বলেন, যে মহিয়সী নারীর স্মরণ সভায় আমরা উপস্থিত হয়েছি আজ থেকে ২৭ বছর আগে তিনি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘনায় নিহত হয়েছিলেন। আজ ২৭ বছর পর সেই সড়ক কতটা নিরাপদ? তিনি বলেন, বিআরটিএ’র তথ্য বলছে দেশে নিবন্ধিত যানবাহনের তুলনায় লাইসেন্দপ্রাপ্ত চালক প্রায় অর্ধেক। আবার দেশে যে পরিমাণ ভারী যানবাহন আছে তার তুলনায় ভারী গাড়ি চালকের সংকট প্রায় দেড় লাখ। অথচ প্রতিদিন এসব যানবাহন রাস্তায় চলছে।দুর্ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, দেশে প্রায় ৩০ লাখ যানবাহনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ফিটনেস নেই। এভাবে কি কোন দেশ চলতে পারে? তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছিলেন ১ নভেম্বর ২০১৯ থেকে।সীমিত পরিসরে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছিলও। কিন্তু কোভিড-১৯ এর কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। ফিটনেসবিহীন গাড়ির ফিটনেসের মেয়াদ ছিল ৩০ জুন ২০২০। সেটি বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বর্তমানে দেশে সবকিছু যদি স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে তাহলে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়নে বাধা কোথায়?ফিটনেসবিহীন গাড়ির ফিটনেস করতে সমস্যা কি? তিনি উপস্থিত সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, একটি স্বার্থান্বেসী মহল সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বানচালের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা সভা-সমাবেশ মানববন্ধন করছে। সরকারকে দফা দিচ্ছে। এরা আর যাইহোক দেশপ্রেমী হতে পারে না। যেখানে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন সেখানে আপোসের কোন সুযগ নেই জানিয়ে জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান সড়কের এই বিশৃংখলা অবিলম্বে দূর করতে।
তিনি বিশ্বব্যাংকের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, বিশ্বব্যাংকের হিসেব মতে বছরে ১২ লাখ মানুষ সড়কে নিহত হচ্ছে। প্রায় ৫ কোটি মানুষ আহত হচ্ছে। এসব দুর্ঘটনার ৯০ শতাংশই ঘটছে স্বল্প এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে। বিশ্বব্যাংক বলছে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ২৫ শতাংশ চালকের বৈধ লাইসেন্স নেই। নিসচা কর্মীদের ট্রাফিক আইন মেনে চলার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু চালকের ভুলে নয় পথচারিদের ভুলেও সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি রাস্তার ডানপাশ দিয়ে হাটার পরামর্শ দিয়ে বলেন, মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হবেন না, বন্ধুর সাথে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হবেন না। চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হবেন না। রাস্তা পারাপারে জেব্রাক্রসিং,আন্ডারপাস বা ওভারপাস ব্যবহার করুন। যেখানে এগুলি নেই সেখানে দেখে বুঝে রাস্তা পার হবেন। হেলমেট ছাড়া মোটর সাইকেল চালাবেন না। একজনের বেশী যাত্রী নেবেন না, তাকেও হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। এরাগে তিনি মরহুমা জাহানারা কাঞ্চনসহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনায় যার যার অবস্থানে দাঁড়িয়ে নীরবে যার যার ধর্মমতে ১ মিনিট প্রার্থনার আহবান জানান। এরপর দোয়া করা হয়।
আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি এস এম আজাদ হোসেন নিরাপদ সড়ক চাই,যশোর জেলা শাখার ২০২০-২০২১ মেয়াদের কমিটি ঘোষনা করেন । মোঃ সাদেকুর রহমান আজাদকে সভাপতি ও শেখ আকবর হোসেনকে সাধারন সম্পাদক এবং আলহাজ্ব এম, তারাজুল ইসলামকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করা হয়।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন