গায়ে জড়ানো নেই কোনো শার্ট। পরনে শুধু কালো প্যান্ট। এভাবে খালি গায়ে নারীদের শরীরে দিচ্ছে করোনার টিকা। আবার একটু চাপ কমলেই টিকাকেন্দ্রের চেয়ারে বসেই ফুঁকছে সিগারেট! রোববার (১০ অক্টোবর) দুপুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। নারী-পুরুষদের জন্য কোনো আলাদা বুথ নেই। এ সময় একজন নার্স ও কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) শহিদুল ইসলাম খালি গায়ে নারীদের টিকা দিচ্ছেন। এ সময় বেশ কয়েকজন নারীকে অস্বস্তিতে পড়তে দেখা গেছে।
টিকা নেওয়ার শেষে কেউ কেউ বলছেন, সরকারি হাসপাতালে এভাবে খালি গায়ে টিকা দেওয়া এর আগে কোনোদিন দেখিনি। এর কিছুক্ষণ আগেই শহিদুল ইসলাম টিকাকেন্দ্রের একটি চেয়ারে বসেই ধূমপান করেছেন। এ সময় তার পাশে টিকা প্রদানে সহায়তাকারী রেড ক্রিসেন্টসহ হাসপাতালের কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। ধূমপান করার সময় পাশেই টিকা দেওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে প্রায় দুপুর ১টা পর্যন্ত তিনি খালি গায়ে টিকা দিয়েছেন। এর মধ্যে তিনি একবার ধূমপানও করেছেন।
হাসপাতালে আসা রিওন হোসেন নামে একজন জানান, একজন সরকারি কর্মচারী কোনোভাবেই খালি গায়ে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। এমন অবস্থায় তিনি নারীদের আবার করোনার টিকা পুশ করছেন। এরপর তিনি টিকাকেন্দ্রে বসেই ধূমপান করছেন। এ ঘটনায় তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।
টিকা নিতে আসা স্বপ্না খাতুন নামে এক নারী জানান, তাকে খালি গায়ে এক ব্যক্তি টিকা দিয়েছেন। এটা তার কাছে অস্বস্তিকর একটা অবস্থা। একদমই দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার পরিচয়!
রিতা রানি নামের আরেক নারী জানান, সরকারি হাসপাতালে খালি গায়ে দায়িত্ব পালন এই প্রথম দেখেছেন। এমন খালি গায়ে টিকা দেওয়ার বিধান যদি না থাকে তাহলে উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) শহিদুল ইসলাম বলেন, গায়ের শার্ট ঘেমে ভিজে গিয়েছিল। তাই খুলে রোদে রেখেছিলাম। এজন্য খালি গায়ে টিকা দিয়েছি। যখন লোকজনের চাপ কম ছিল, তখন একটু দূরে বসে ধূমপান করেছি।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. অরুন কুমার বলেন, খালি গায়ে দায়িত্ব পালন করার কোনো নিয়ম নেই। তাছাড়া পাবলিক স্থানে ধূমপান করার কোন বিধানও নেই। চাকরি বিধি অনুযায়ী যদি তিনি কোনো ধরনের অবহেলা করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।