যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ায় নির্বাচনী সহিংসতায় আহত মোস্তাক ধাবক আজ শনিবার ভোররাত ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি বাগআঁচড়া ইউনিয়নের সাতমাইল পশুহাটের ইজারাদার আব্দুল খালেক ধাবকের ছেলে। তার বাড়ি শার্শা উপজেলার সাতমাইল নামক গ্রামে।
এ ঘটনায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও কর্মীরা আসামি আটকের দাবিতে সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত যশোর-সাতক্ষীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুষ্ঠু বিচার ও আসামি আটকের বিষয়ে অবরোধকারীদের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন। এদিকে, মোস্তাক ধাবকের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। তাদের আজাহারিতে ভারি হয়ে উঠেছে পরিবেশ।
নিহত মোস্তাক ধাবকের চাচাতো ভাই ও মামলার বাদী শফিক মাহমুদ জানান, গত ১৬ নভেম্বর মঙ্গলবার যশোরের শার্শার বাগআঁচড়ার সাতমাইল পশুর হাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে বায়তুল মামুর জামে মসজিদের সামনে নির্বাচনী সহিংসতায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল খালেক ধাবক ও নৌকার প্রার্থীর বর্তমান চেয়ারম্যান ইলিয়াছ কবির বকুলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
এ সময় মোস্তাক ধাবকসহ উভয় গ্রুপের ৭ জন আহত হন। আহত সকলকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মোস্তাক ধাবকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরের দিন তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। আজ শনিবার ভোররাত ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে, মোস্তাক ধাবকসহ ৭ জন আহতের ঘটনায় ১৭ নভেম্বর ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে আসামি করে শার্শা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মোস্তাক ধাবকের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছলে স্বতন্ত্র প্রার্থী খালেক ধাবকের কর্মী-সমর্থকরা হত্যাকারীদের আটকের দাবিতে সকাল থেকে সাতমাইল ও বাগআঁচড়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। একপর্যায়ে সকাল ৮টার দিকে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কে গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
৩ ঘণ্টা চেস্টার পর নাভারন সার্কেলের এএসপি জুয়েল ইমরানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুষ্ঠু বিচার ও আসামিদের আটকের প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধকারীরা অবরোধ তুলে নেন। এ ঘটনায় গোটা বাগআঁচড়া এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। যেকোনো সময় আরো বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকার লোকজন।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম খান জানান, ১৬ নভেম্বর বাগআঁচড়ায় নির্বাচন সহিংসতায় আহত মোস্তাক ধাবক ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থরা নাভারন- সাতক্ষীরা সড়কে কয়েক ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে যানচলাচল বন্ধ করে দেন। ঢাকা থেকে নিহতের লাশ পৌঁছতে রাত হবে।
তবে এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় শার্শা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের আটকে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন