বাগেরহাটে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে নতুন করে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মোংলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জ উপজেলায় একজন করে করোনায় মারা গেছেন। এনিয়ে জেলায় করোনায় ৭৩ জন মারা গেলেন।
বুধবার বাগেরহাটে ১৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জেলায় নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণ হার এক দিনের ব্যবধানে প্রায় ৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪৪. ১১ শতাংশে।
বাগেরহাট সদরে উপজেলায় ২৫টি নমুনা পরীক্ষায় ২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সদর উপজেলায় সংক্রমণ হার ৬৩. ৩৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কচুয়ায় ৫টি নমুনা পরীক্ষায় ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কচুয়ায় সংক্রমণ হার ৬০ শতাংশ। রামপালে ১৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। রামপালে সংক্রমণ হার ৫৩. ৮৪ শতাংশ। মোরেলগঞ্জে ২১টি নমুনা পরীক্ষায় ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মোরেলগঞ্জে সংক্রমণ হার ৪২. ৮৫ শতাংশ। ফকিরহাটে ১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ জন আক্রান্ত হয়েছে। ফকিরহাটে সংক্রমণের হার ১০০ শতাংশ। শরণখোলা উপজেলায় ১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ জন আক্রান্ত হয়েছে। শরণখোলায় সংক্রমণের হার ১০০ শতাংশ।
করোনার হটস্পট মোংলায় সংক্রমণ হার কিছুটা কমেছে। আক্রান্তের সংখ্যা আবাও বেড়েছে। মোংলায় ৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। মোংলায় সংক্রমণ হার ৩৫.৭১ শতাংশ থেকে ২৪ ঘণ্টায় কমে দাঁড়িয়েছে ৩০. ১৮ শতাংশে। চিতলমারীতে ১৭টি নমুনা পরীক্ষায় ২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চিতলমারীতে সংক্রমণ হার ১১. ৭৬ শতাংশ। বাগেরহাটে এখন মোংলার পাশাপাশি বাগেরহাট সদর, ফকিরহাট, রামপাল, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার গ্রামে-গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। বাগেরহাট স্বাস্থ্য বিভাগ এতথ্য নিশ্চিত করেছে।
মোংলায় প্রশাসনের তৃতীয় দফায় কঠোর বিধিনিষেধ বুধবার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে। মোংলায় গ্রামে-গঞ্জে করোনা ছড়িয়ে পড়লেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষ চলাফেরা করছে। এই অবস্থার মধ্যেও মোংলায় দেয়া হয়নি লকডাউন। জনসমাগমের উৎসস্থল হাটবাজারে রয়েছে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। প্রশাসনের আরোপ করা কঠোর বিধিনিষেধ কেউ মানছেন না। খেয়া নৌকাতে গাদাগাদি করে যাত্রী পারাপার চলছে। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। প্রশাসনের আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধ আবারো বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির জানান, বাগেরহাটে দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত মার্চ মাস থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। তবে জেলায় গত দুই সপ্তাহ ধরে সংক্রমণের হার বেশি। মোংলা, রামপাল, ফকিরহাট শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাট পৌরসভা এলাকা এখন করোনা হটস্পট হয়ে উঠেছে। জেলায় সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল। জেলায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে ওঠা-নামা করছে। করোনা সংক্রমণ রোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায়েছে ২ হাজার ৭৫১ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৩ জন। জেলা সদরে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ও ৮টি উপজেলা হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৯৫ জন। হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ৬৪১ জন।