ফরিদপুরে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ভিড়। প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক হাজারের অধিক শিশু নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতাল ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।
ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী মো. টিটু মণ্ডল জানান, হঠাৎ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বেড়েছে। তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিদিন বর্হিবিভাগে ৮০০-৯০০ শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিদিন গড়ে ৯০ জন শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স গোলাপী বেগম বলেন, রোববার বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালে ১৮০ শিশু ভর্তি রয়েছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে, আবার নতুন কেউ ভর্তি হচ্ছে।
রাজবাড়ি থেকে আসা আসমা বেগম বলেন, আমার এক বছরের বাচ্চা কয়েকদিন ধরে ঠান্ডা-কাশি। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসায় ভালো না হওয়ায় হাসপাতালে এনে ভর্তি করেছি।
ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর থেকে আসা বক্কর শেখ বলেন, আমার বাচ্চার বয়স ১০ মাস। তিন দিনেও ঠান্ডা না কমায় হাসপাতালে নিয়ে আসছি।
মাদারীপুরের রাজৈর থেকে আসা শারমিন আক্তার বলেন, ৯ মাসের মেয়েকে নিয়ে এসেছি ডাক্তার দেখাতে। ঠান্ডা লেগেছে, শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসকরা হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেছেন।
ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. পার্থ প্রতিম শিকদার বলেন, শীতকালের রাতে বেশ ঠান্ডা পড়ে। ফলে শিশুরা নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। হঠাৎ শিশুদের আক্রান্তের হার খুব বেড়েছে। তবে চিন্তার কিছু নেই।
ওই হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দিন ফরিদ বলেন, গত এক সপ্তাহে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা দ্বিগুণ। গত এক সপ্তাহে পাঁচ হাজার ৬৬৫ শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন গড়ে ৯০ জন শিশুকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাও বেড়েছে। সাধারণত শীতের সময় শিশুরা এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। তবে এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। আক্রান্তদের চিকিৎসার পাশাপাশি আমরা যথেষ্ট সজাগ রয়েছি।