চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) দেশে ৪০৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন, যার মধ্যে ২৪২ জনই ছাত্রী। গড়ে ২৬ দশমিক ৮৯, অর্থাৎ ২৭ জন ছাত্রী প্রতি মাসে আত্মহত্যা করেন।
শনিবার (৮ অক্টোবর) সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের জরিপের এ তথ্য উঠে এসেছে। ভার্চুয়ালি এক আলোচনাসভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক ড. এ ওহাব।
ড. ওহাব জানান, গত ৯ মাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছেন ৪০৪ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৫৭ জন, স্কুলের ২১৯ জন, মাদরাসার ৪৪ জন এবং কলেজপড়ুয়া ৮৪ জন।
আত্মহননকারীদের মধ্যে ছাত্রী ২৪২ জন ও ছাত্র ১৬২ জন। জরিপ অনুযায়ী, গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ২৭ জন ছাত্রী এবং ১৮ জন ছাত্র আত্মহত্যা করে থাকেন।
আঁচল ফাউন্ডেশনের এই গবেষক আরও বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে প্রেমঘটিত কারণে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের ওপর একাডেমিক চাপ তাদের আত্মহত্যার পেছনে কতটুকু দায়ী এবং অন্যান্য কী কী কারণ জড়িত, তা জানার লক্ষ্যেই এই গবেষণা জরিপ পরিচালিত হয় বলে জানান এই গবেষক।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরন বিবেচনায় জরিপে মোট অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের। এ ছাড়াও ২৩ দশমিক ৪১ শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের, ২ দশমিক ২৬ শতাংশ মেডিকেল শিক্ষার্থী এবং বাকিরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি এবং মাদরাসার।
জরিপে ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
এ সময় বাংলাদেশ সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক (অব.) ড. মো. মাহমুদুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন এবং আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।