গত আট মাসে ৮১৩ নারী ধর্ষণ ও ১১২ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। আর অপহরণ ও পাচার হয়েছে ১৪০ জন। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আব্দুস সালাম হলে ‘কন্যাশিশুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন ২০২১’ উপস্থাপন করেন ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি। তিনি জাতীয় ও স্থানীয় ২৪টি সংবাদমাধ্যমে আসা নির্যাতনের প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
নাছিমা আক্তার উল্লেখ করেন, ২০১৬-২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে ২৬ হাজার ৬৯৫টি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। প্রতি বছর এ মামলার পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এছাড়া ২০২০ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে এক হাজার ২৫৩ জন কন্যাশিশু।
প্রতিবেদনে যৌতুক, গৃহকর্মী নির্যাতন, আত্মহত্যা ও হত্যাসহ নানা নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয়। এ বিষয়ে সুপারিশ করা হয় ৯টি। সেগুলো হলো-
শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ ঘটনাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত সময়ে বিচার শেষ করা, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, কন্যাশিশু নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ করা, পৃথক অধিদপ্তর গঠন, বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের দেশে আইনের শাসন নেই। গণমাধ্যমে আসলেই আলোচিত হয়। তার আগে কোনো ঘটনাকে এতোটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
কন্যাশিশু নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময় এমন পরিস্থিতি হয়েছে তা নয়। আমরা দেখেছি এই পরিস্থিতি বিগত সরকারের সময়ও ছিল। ক্ষমতাসীনরা এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই জড়িত থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- এডুকো বাংলাদেশের ডিরেক্টর অব প্রোগ্রাম ফারজানা, একশনএইড বাংলাদেশের চাইল্ড স্পন্সরশিপ ম্যানেজার মনিকা বিশ্বাসসহ সংগঠনটির বেশ কয়েকজন সদস্য।