গ্রামের রাস্তার বেহালদশা। সেই রাস্তায় ঢোকে না কোনো যানবাহন, এমনকি অ্যাম্বুলেন্সও। এই অবস্থায় এক মুমূর্ষু রোগীকে বাঁশের খাটিয়ায় তুলে কাঁধে ঝুলিয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না রোগীর। ২ বছরের সন্তানকে রেখে চলে গেলেন ২৫ বছরের মা।
এমনই হাড় হিম করা ঘটনা ঘটলো পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার বামনগোলা থানা এলাকার গোবিন্দপুর মালডাঙ্গা গ্রামে। মৃতের নাম মামনি রায়।
জানা গেছে, গত দুই তিন ধরে অজানা জ্বরে ভুগছিলেন মামনি, ঘরোয়া চিকিৎসা করছিলেন মামনির পরিজনরা। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য মামনি রায়ের পরিবারের সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্স ডেকে পাঠান।
কিন্তু গ্রামের রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য গ্রামে কোনো যানবাহনই ঢোকে না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
এমনকি মামনি রায়ের স্বামী কার্তিক রায় স্থানীয় এক সিএনজি চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনিও বলে দেন, রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যাওয়া সম্ভব নয়।
এই অবস্থায় কোনো উপায় না দেখে তাকে বাঁচাতে বাঁশের খাটিয়ায় করে গ্ৰামের মেঠো পথ পেরিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন পরিবারের লোকজন।
গন্তব্য ছিল প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বামনগোলা গ্রামীণ হাসপাতাল। বেহাল রাস্তা পেরিয়ে হাসপাতলে পৌঁছাতে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। হাসপাতলে পৌঁছালে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা মামণিকে দেখে মৃত বলে ঘোষণা দেন।
এরপর চিকিৎসকেরা জানান, একটু আগে নিয়ে আসতে পাড়লে হয়তো কিছু একটা করা যেতো। অন্তত চিকিৎসা দেওয়া যেতো। এতটাই দেরি হয়েছে আমাদের আর কিছুই করার নেই।
এই ঘটনা সামনে আসার পরেই রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকেই মালদাহের কলোনি এলাকায় রাজ্য সড়ক অবরোধ করে গ্ৰামবাসীরা।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি। পরে পুলিশ এবং ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার (বিডিও) এসে রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ উঠে যায়।