ইউক্রেনের শহরজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠে শুক্রবার ভোরে। হামলার আশঙ্কায় কিয়েভের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইউক্রেন সরকারের দাবি, গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া যুদ্ধ শুরু করার পর ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে বৃহস্পতিবার। রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনজুড়ে বিভিন্ন শহরে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।
রাজধানী কিয়েভের নগর কর্তৃপক্ষ, সকালে টেলিগ্রাম চ্যানেলে বিমান হামলার ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে এবং বাসিন্দাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানায়।
কিয়েভ অঞ্চলের গভর্নর টেলিগ্রামে বলেন ‘ড্রোন হামলা চালানো হচ্ছে।’
রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কিয়েভের ২০ কিলেমিটার দক্ষিণে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন তিনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, বৃহস্পতিবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, মধ্য, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম ইউক্রেনে দেশটির বিমান বাহিনী বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ৫৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ১১টি ড্রোন ভূ-পাতিত করেছে।
তবে তিনি স্বীকার করেছেন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তার দেশের অধিকাংশ অঞ্চলের মানুষ।
ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী এর আগে জানায়, আকাশ ও সাগর পথে ইউক্রেনের বিভিন্ন দিকে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবারের হামলায় রাশিয়া কামিকাজে ড্রোনও ব্যবহার করেছে বলে দাবি করে কিয়েভ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের কোনো রাষ্ট্রের ওপর সবচেয়ে বড় হামলা করে রাশিয়া। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তিন দিক থেকে ইউক্রেন আক্রমণ করে রুশ সেনারা। আতঙ্কে কিয়েভ ছাড়েন হাজার হাজার ইউক্রেনীয়। পূর্ব ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর নির্দেশের আগে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, পূর্ব ইউক্রেন এক সময় রাশিয়ার ভূমি ছিল। পুতিনের এ ঘোষণার পরপর শুরু হয় ইউক্রেন আগ্রাসন। বছর শেষ হতে চললেও এখনো যুদ্ধ থামার লক্ষণ নেই।
এখনো হামলা অব্যাহত রয়েছে ইউক্রেনে। এদিকে, পাল্টা প্রতিরোধ যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে দফায় দফায় ইউক্রেনকে সহায়তা দিচ্ছে পশ্চিমা মিত্ররা।