কথায় বলে, একবার না পারিলে দেখ শতবার। দক্ষিণ কোরিয়ার এক দৃঢ়চেতা নারী শতবার নয়, হাজারবার চেষ্টা করে তবেই গাড়ি চালানোর অনুমতি বা ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছেন। ১৮ বছর আগের সেই ঘটনা নতুন করে সামনে আসার পর সেটি ভাইরাল হয়েছে নেট দুনিয়ায়।
নিউইয়র্ক পোস্টের মতে, অনেক ব্যর্থ প্রচেষ্টার পরও চা সা-চুন তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে অধ্যাবসায়ের উদাহরণ তৈরি করেছিলেন, সেটি ২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক শিরোনাম হয়েছিলো। কারণে, এ ধরনের অধ্যাবসায় ও মানসিক দৃঢ়তার গল্প খুব কমই আছে মানব ইতিহাসে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে এই কোরিয়ান নারী ২০০৫ সালের এপ্রিলে প্রথম লিখিত পরীক্ষা দেন। এতে তিনি ব্যর্থ হবার পর হাল ছেড়ে দেননি। তিনি তিন বছর ধরে প্রতি একদিন, সপ্তাহে পাঁচ দিন পুনরায় পরীক্ষা দিতে থাকেন। তারপরে, তার গতি কমে যায়, সপ্তাহে প্রায় দুবার।
কিন্তু তিনি কখনই হাল ছাড়েননি এবং ৮৬০ বার লিখিত পরীক্ষার পরে পাস করেন সা-চুন। এর পর শুরু হয় তাঁর ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার আরও কঠিন লড়াই। চা সা-সুনকে একশবার এই পরীক্ষা দিতে হয়। সব মিলিয়ে তার ড্রাইভিং পরীক্ষার সংখ্যা ৯৬০ এ।
অবশেষে সা-চুন যখন ড্রাইভিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, তখন তার বয়স ছিলো ৬৯ বছর। আর এত সব পরীক্ষা পাস করার জন্য তাকে খরচ করতে হয়েছিলো ১১ লাখ টাকার বেশি অর্থ। তার এই গল্প ছড়িয়ে পরার সা-চুন দক্ষিণ কোরিয়া জাতীয় তারকায় পরিণত হন।
ড্রাইভিং স্কুলের প্রশিক্ষক পার্ক সু-ইয়ন সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে বলেন, অবশেষে যখন সে তার লাইসেন্স পেলো, আমরা সবাই উল্লাস করে বেরিয়ে গেলাম এবং তাকে ফুল দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। পিঠ থেকে বড় বোঝা নেমে গেলে যেমন অনুভূতি হয়, তেমনটাই হয়েছিলো আমার।
গোটা দক্ষিণ কোরিয়ায় চা সা-চুন পরিণত হন দৃঢ়চেতা ও অধ্যাবসায়ের প্রতীক হিসাবে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাকে আমন্ত্রণ জানাতো এই গল্প শোনার জন্য। সবচেয়ে মজার বিষয় ছিলো, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবার পর সা-চুনকে একটি নতুন গাড়ি উপহার দিয়েছিলো হুন্দাই।