সিঙ্গাপুরে মাদক পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
বুধবার চাঙ্গি কারাগারে ওই ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। দেশটিতে এ নিয়ে এক বছরে মাদক পাচারের দায়ে ১৪ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হলো।
কর্মকর্তারা বলেছেন, শুক্রবার একই অপরাধে অভিযুক্ত এক মহিলার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে, এটি হবে প্রায় ২০ বছরের মধ্যে এই সিটি স্টেটে কোন মহিলা বন্দীর প্রথম মৃত্যুদণ্ড।
সেন্ট্রাল নারকোটিক্স ব্যুরো এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘৪৯.৯৮ গ্রামের বেশী’ (১.৭৬ আউন্স) হেরোইন পাচারের জন্য ২০১৭ সালে দোষী সাব্যস্ত মোহাম্মদ আজিজ বিন হুসেনকে চাঙ্গি কারাগারে বুধবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
কোভিড -১৯ মহামারী চলাকালীন দুই বছরের বিরতির পরে সরকার ২০২২ সালের মার্চ মাসে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর থেকে ৫৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ আজিজ বিন হুসেন ১৪তম আসামি ছিলেন। তার দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং সাজার বিরুদ্ধে হুসেনের আগের আপিল খারিজ করা হয়েছে এবং প্রেসিডেন্টের ক্ষমার আবেদনও খারিজ করা হয়েছে।
স্থানীয় মানবাধিকার গ্রুপ ট্রান্সফরমেটিভ জাস্টিস কালেক্টিভ (টিজেসি) জানায়, শুক্রবার ৪৫ বছর বয়সী এক নারী মাদক পাচারে অভিযুক্ত সারিদেউই দিয়ামানিকে ফাঁসিতে ঝুলানোর কথা রয়েছে।
২০১৮ সালে প্রায় ৩০ গ্রাম হেরোইন পাচারের অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়।
টিজেসি কর্মী কোকিলা আন্নামালাই এর মতে, ২০০৪ সালের পর সারিদেউই দিয়ামানি হবেন মৃতুদণ্ড কার্যকর হওয়া প্রথম নারী, ২০০৪ সালে ৩৬ বছর বয়সী হেয়ারড্রেসার ইয়েন মে ওয়েনকে মাদক পাচারের দায়ে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।
সিঙ্গাপুরে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন মাদকবিরোধী আইন রয়েছে, এ আইনে ৫০০ গ্রামের বেশি গাঁজা বা ১৫ গ্রামের বেশি হেরোইন পাচার করলে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, মৃত্যুদণ্ড অপরাধের প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করেছে এমন কোনো প্রমাণ নেই।
অ্যামনেস্টির মৃত্যুদণ্ড বিশেষজ্ঞ চিয়ারা সাঙ্গিওর্জিও এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটা অবাঞ্ছিত যে সিঙ্গাপুরের কর্তৃপক্ষ মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে নিষ্ঠুরভাবে আরও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে চলেছে।’
সিঙ্গাপুর অবশ্য জোর দিয়ে বলেছে, মৃত্যুদণ্ড এটিকে এশিয়ার অন্যতম নিরাপদ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।