স্থানীয় সময় আজ শনিবার সকাল ৭টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে এবং ভোট গ্রহণ শেষ হবে বিকেল ৪টায়। আনুষ্ঠানিক ফলাফল পাওয়া যেতে পারে রবিবার সকালে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নতুন আইন অনুযায়ী, একজন ভোটার তিন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। কোনো একজন প্রার্থী কমপক্ষে ৫০ শতাংশ বা এর চেয়ে বেশি ভোট পেলে, তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
যদি কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পায়, তাহলে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় দফা ভোট হবে।
এদের মধ্যে আছেন, রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনি ছয় বারের প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের অপসারণের পরে ২০২২ সালের অন্তর্বর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। যদিও ৭৫ বছর বয়সী কেন্দ্রীয়-ডান ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তবুও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে শীর্ষ পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই ভোটের আগে শতাধিক সমাবেশ করেন বিক্রমাসিংহে।
শক্ত অবস্থানে আছেন বিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়েগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। তিনি সাবেক এক প্রেসিডেন্টের ছেলে, যিনি ১৯৯৩ সালে গৃহযুদ্ধের সময় আততায়ীর হাতে নিহত হন। সাজিথ প্রেমাদাসা এই নির্বাচনে বেশ ভালো করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আরেক প্রার্থী হলেন ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির নেতা অনুড়া কুমার দিসানায়েক।
একসময় প্রান্তিক পর্যায়ে চলে যাওয়া মার্ক্সবাদী দলের নেতা তিনি। তবে শ্রীলঙ্কার সংকট অনুড়া কুমার দিসানায়েকের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
এ ছাড়া রাজাপক্ষে পরিবার থেকে প্রার্থী হয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী নমল রাজাপক্ষে। এই পরিবার থেকে অতীতে দুজন প্রেসিডেন্ট ছিলেন। একজন হলেন নমলের বাবা মাহিন্দা রাজাপক্ষে আর অপরজন চাচা গোতাবায়া রাজাপক্ষে। নমল লড়ছেন শ্রীলঙ্কান পদুজন পেরামুনা (এসএলপিপি) দল থেকে। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা তার আরেক চাচা বাসিল রাজাপক্ষে।
অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ২০২২ সালে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয় শ্রীলঙ্কা। এরপর তীব্র বিক্ষোভ শুরু হলে, একপর্যায়ে হাজার হাজার মানুষ সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের বাসভবনে ঢুকে পড়ে। ওই বছরেই তখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন গোতাবায়া। এরপর বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক মন্দা অনেকটাই সামলে নিয়েছে, তবে এখনো বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ শুরু করেনি দেশটি। যার বিদেশি ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ ও ২০২২ সালের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় দারিদ্র্য দ্বিগুণ হয়ে ২৫ শতাংশে পৌঁছেছে।
গত বুধবার মধ্যরাতে ভোট গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়। এই নির্বাচনে শ্রীলঙ্কার মোট ১ কোটি ৭০ লাখের বেশি ভোটার ভোট দিতে পারবেন।