অস্ট্রেলিয়ায় যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে ফের রাস্তায় নেমেছেন নারীরা। হয়রানি-নিগ্রহের প্রতিবাদ ও নারীর সমতা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন তারা।
সোমবার দেশজুড়ে এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন এক লাখেরও বেশি নারী।
ওই বিক্ষোভ কর্মসূচির আওতায় এদিন শুধু রাজধানী ক্যানবেরা নয়, প্রধান দুই শহর সিডনি ও মেলবোর্নসহ প্রায় ৪০টি শহরে দলে দলে পদযাত্রায় শামিল হন তারা। দ্য গার্ডিয়ান।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটিতে সম্প্রতি নারীদের যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ক্ষোভ বেড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এ নিয়ে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে রয়েছে রক্ষণশীল স্কট মরিসন সরকার।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন নারীরা। সোমবার ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ (ন্যায়বিচারের জন্য পদযাত্রা) নামে বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। রাজধানী ক্যানবেরাসহ ৪০টির বেশি শহরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই বিক্ষোভে অংশ নেন হাজারো নারী।
বিক্ষোভ হয় পার্লামেন্ট ভবনের বাইরেও। আয়োজকরা বলছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার এ যাবতকালের ইতিহাসে এটাই নারীদের সবচেয়ে বড় বিদ্রোহ।’ শহরে রাস্তায় রাস্তায় অংশ নেওয়া অনেককে বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা যায়। কালো জামা পরে পদযাত্রায় অংশ নেন অনেক বিক্ষোভকারী।
মেলবোর্নে মিছিলে নারীরা একটি দীর্ঘ ব্যানার হাতে বহন করেন। গত কয়েক দশকে নির্যাতনে নিহত নারীদের নামের তালিকা লেখা হয়েছে এ ব্যানারে।
গত মাসের শেষদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনকে পাঠানো একটি চিঠিতে জানানো হয়, অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান পোর্টার ১৯৮৮ সালে ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছিলেন। গত সপ্তাহে তার বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে।
তবে পর্টার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এদিকে সাবেক রাজনৈতিক পরামর্শক ব্রিটানি হিগিন্স ফেব্রুয়ারিতে অভিযোগ আনেন, ২০১৯ সালে এক মন্ত্রীর কার্যালয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনাগুলো দেশটির সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।
হিগিন্স বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় নারীদের যৌন নিপীড়নের ব্যাপারে একটি ভয়াবহ সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার ঘটনাটি সামনের পাতায় এসেছে এ কারণে যে, এটি নারীদের মনে করিয়ে দিয়েছে এমন ঘটনা সংসদেও ঘটতে পারে এবং সত্যিকার অর্থে যে কোনো জায়গায় ঘটতে পারে।’
এ ঘটনায় একটি পিটিশন দায়েরের পরিকল্পনা নিয়েছেন ক্যানবেরার বিক্ষোভ আয়োজকরা। পার্লামেন্টে যৌনতাবাদী আচরণের জবাবদিহি চেয়ে ৯০ হাজারেরও বেশি নারী এ পিটিশনে স্বাক্ষর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বিক্ষোভকারীরা ক্রিশ্চিয়ান পর্টারের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্তের মামলা পুলিশ নিষ্পত্তি করেছে। কিন্তু অন্যরা আরেকটি পৃথক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।