দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্মজীবী আফগান নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে তালেবান। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, কর্মজীবী নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ঘরে তাদের থাকতে হবে।
তবে ‘এটি খুবই স্বল্প সময়ের জন্য একটি প্রক্রিয়া’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মঙ্গলবার কাবুলে সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের এই মুখপাত্র বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর অনেকেরই প্রশিক্ষণ নেই যে কিভাবে নারীদের সাথে আচরণ করতে হয় বা তাদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়।
“পূর্ণ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিচ্ছি।”
নারীদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশলেট মঙ্গলবার বলেন, তিনি তালেবানদের দ্বারা শিশু সৈনিক নিয়োগ এবং মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কথা জানতে পেরেছেন।
তিনি জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় বক্তব্য রাখছিলেন। পরে কাউন্সিল নারী ও মেয়েদের অধিকারের প্রতি তার “অটল অঙ্গীকার” নিশ্চিত করে একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে।
কিন্তু অনেক মানবাধিকার গোষ্ঠী আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ তদন্ত প্রতিনিধি পাঠানোর যে আহ্বান জানিয়েছিল তা শেষমেশ অনুমোদন পায়নি।
ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তালেবান বেশ সংযত আচরণ করছে এবং তারা নারী ও মেয়েদের অধিকার এবং বাক-স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবারের ওই সংবাদ সম্মেলনে তালেবান মুখপাত্র রাজধানী কাবুল থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন উচ্ছেদের কথাও তুলে ধরেছেন।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দেশটির বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে বলেন, আফগানদের সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ নয়।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকার উচিৎ আফগানদের চলে যাওয়ার জন্য “উৎসাহিত করা” বন্ধ করা। কারণ আফগানিস্তানে তাদের প্রতিভার প্রয়োজন রয়েছে।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান ত্যাগের জন্য বেধে দেওয়া ৩১ অগাস্টের সময়সীমা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
তবে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস স্বীকার করেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়সীমা বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই।
মার্কিন সেনারা কাবুল বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ করছে, যেখান থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৮ হাজার ৭০০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ৩১ আগস্টের মধ্যেই সরিয়ে নেওয়ার অভিযান সম্পর্কে তালেবানদের অবস্থান আবারও নিশ্চিত করেছেন।
রাষ্ট্রপতি বাইডেন মঙ্গলবার জি সেভেন-ভুক্ত নেতৃস্থানীয় শিল্পোন্নত দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
ব্রিটিশ নাগরিক, অন্যান্য বিদেশি নাগরিক এবং বিদেশে পুনর্বাসনের যোগ্য আফগানসহ হাজার হাজার মানুষ এখনও আফগানিস্তান ত্যাগের অপেক্ষায় রয়েছে।