গত এক দশকে যুক্তরাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে মুসলমানের সংখ্যা ৪.৯ থেকে বেড়ে ৬.৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের (ওএনএস) তথ্য অনুসারে মুসলমানের অনুপাত ১০ বছরে বেড়েছে ১.২ মিলিয়ন। ২০২১ সালের সমীক্ষা অনুসারে মুসলমানের সংখ্যা ৩.৯ মিলিয়ন।
যুক্তরাজ্যের মুসলিমদের সর্ববৃহৎ সংগঠন মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের (এমসিবি) মহাসচিব জারা মুহাম্মদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আমাদের দেশে বৃদ্ধ জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমান হলেও তরুণ মুসলিম জনগোষ্ঠী কৌশলগত জাতীয় সম্পদ হিসেবে কর্মশক্তিতে অবদান রাখছে। গত দশকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের অনেক মুসলিমকে দেখা গেছে যাঁরা নিজেদের বিশ্বাস ও সমাজে স্থান নিয়ে খুবই আত্মবিশ্বাসী। তাঁরা এই দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও প্রাণশক্তিতে ব্যাপক অবদান রেখেছে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘ওএনএসের তথ্য অনুসারে যুক্তরাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অস্বাভাবিক বঞ্চনার প্রভাব আছে। ইংল্যান্ডের মুসলিম জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ স্থানীয় জেলাগুলোর সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত অংশে বসবাস করে। ২০১১ সালের তুলনায় বর্তমানে পাঁচ লাখের বেশি মুসলিম এসব সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় বাস করে। নীতিনির্ধারকদের এখনই এই উদ্বেগের সমাধান করতে হবে। সম্প্রদায়টিকে দুর্বল সামাজিক গতিশীলতার চক্রে ফেলে রাখা যাবে না। তরুণদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ থাকবে না, যদি তাদের জন্য সেরা সুযোগ না থাকে। ’
আদমশুমারিতে দেখা গেছে, অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর তুলনায় ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে মুসলিমদের সংখ্যা অনেক বেশি। সবচেয়ে বেশি মুসলিম বসবাস করা পাঁচটি শহরের মধ্যে বার্মিংহামে তিন লাখ ৪১ হাজার ৮১১ জন, ব্র্যাডফোর্ডে এক লাখ ৬৬ হাজার ৮৪৬, লন্ডন বরো অব টাওয়ার হ্যামলেটে এক লাখ ২৩ হাজার ৯১২, ম্যানচেস্টারে এক লাখ ২২ হাজার ৯৬২ ও লন্ডন বরো অব নিউহ্যামে এক লাখ ২২ হাজার ১৪৬ জন বসবাস করে।
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে প্রতি ১০ বছর পর আদমশুমারি করা হয়। ২০১১ সালের তুলনায় ওই দুটি অঞ্চলে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা কমেছে ১৩.১ শতাংশ। এই দুই শহরে ২৭.৫ মিলিয়ন বা ৪৬.২ শতাংশ অর্থাৎ মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের কম খ্রিস্টান। এদিকে ধর্মহীন লোকের সংখ্যা ১২ শতাংশ বেড়ে ৩৭.২ শতাংশ বা ২২.২ মিলিয়ন বৃদ্ধি পেয়েছে।