ভারতের হরিয়ানা রাজ্য পুলিশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধী’র তালিকায় নাম রয়েছে ওম প্রকাশ ওরফে পাশার। ভারতের সেনাবাহিনীর সাবেক এই কর্মচারী ৩০ বছর ধরে পলাতক ছিলেন। ডাকাতি ও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর তিনি লাপাত্তা ছিলেন।
বিবিসি জানিয়েছে, এর মধ্যে বদলে গেছে পাশার জীবনের অনেক কিছু। একে একে ২৮টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে পুলিশের চরিত্রও রয়েছে।
সেই পাশাকে আটক করেছে ভারতের পুলিশ। ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ওই ‘প্রতিভাবান’ ব্যক্তি এতদিন লুকিয়ে ছিলেন পাশের রাজ্য উত্তর প্রদেশে। উত্তর প্রদেশের ঘাজিয়াবাদ শহরের বস্তি থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলায় জড়িয়ে পড়ার পর সাবেক এই সেনা সদস্যের নতুন এক জীবন শুরু হয়। পালিয়ে তিনি যেখানে আশ্রয় নেন, সেখানে এক নারীকে বিয়ে করে গড়ে তোলেন সংসার। তিন সন্তানের জন্ম হয় এ পরিবারে।
পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারের আগে পর্যন্ত ওম প্রকাশ বেশ কয়েকটি টুপি পরে ঘুরে বেড়াতেন, কখনও ট্রাক চালাতেন, গ্রামে ঘুরে ঘুরে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ভক্তিমূলক গান গাইতেন।
এমনকি স্বল্প বাজেটের স্থানীয় ২৮ সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে পুলিশের পোশাকেও তাকে পর্দায় হাজির হতে দেখা গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে ওম প্রকাশের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারে অংশ নেয়া হরিয়ানার স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের উপপরিদর্শক বিবেক কুমারা বলেছেন, ১৯৯২ সালের হত্যাকাণ্ডের জন্য আরেকজনকে দায়ী করেছেন পাশা।
২৫ বছর ধরে রাজকুমারীর সঙ্গে ওম প্রকাশের সংসার। স্বামীর গ্রেপ্তার নিয়ে রাজকুমারী বলেন, আসলে তার অতীতের অপরাধ নিয়ে আমরা কিছুই জানতাম না।
তিনি আরো বলেন, ১৯৯৭ সালে আমাদের বিয়ে হয়। তার যে হরিয়ানায় আগের এক স্ত্রী আছে, সে তথ্যও আমার কাছে লুকিয়েছে।
হরিয়ানার নারিয়ানা গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ১২ বছর ধরে ট্রাক চালিয়েছেন ওম প্রকাশ। তবে চার বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে তার চাকরি চলে যায়।
ওম প্রকাশের বিরুদ্ধে চুরি-ডাকাতির অভিযোগ অনেক পুরনো। ১৯৮৬ সালে একটি গাড়ি, তার চার বছর পর স্কুটারসহ আরো কিছু চুরির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
১৯৯২ সালের জানুয়ারিতে বাইকে থাকা এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করে ওম প্রকাশ ও তার সহযোগীরা বাইকটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই সময় তার সহযোগী গ্রেপ্তার হলেও পালিয়ে নিরুদ্দেশ হন ওম। এতো বছর পর তাকে আটক করা হলো।