English

16 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৮৬২

- Advertisements -

শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে বিধ্বস্ত মরক্কোয় প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে দেশটির অ্যাটলাস পর্বতমালায় ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দেশটিতে কমপক্ষে ২ হাজার ৮৬২ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও আড়াই হাজার মানুষ।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তালাত নিয়াকুব এলাকায় ১২টি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সেনা সদস্য, পুলিশ এবং শতাধিক উদ্ধারকর্মী কাজ করছেন। তারা বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

৩২ বছর বয়সী নির্মাণ কর্মী হাফিদ আইত লাহচেন বলেন, আমার মা মারা গেছেন। তিনি যে বাড়িতে ছিলেন তা ধ্বংস হয়ে গেছে। আমিজমিজে আমার থাকার জায়গাও আর অবশিষ্ট নেই। সে কারণে আমাকে ছোট ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে বাইরে একটি ছোট তাবুতে আশ্রয় নিতে হয়েছে।

তিনি জানিয়েছেন, তার এক সন্তানের বয়স মাত্র চার মাস এবং অন্য সন্তানের ৬ বছর। হাফিদ আইত বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাদের থাকার জন্য কোনো ব্যবস্থা করে দেয়নি। আমরা পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছি।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মরক্কোর পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন দেশ। ব্রিটেন জানিয়েছে, তারা সেখানে ৬০ জনের একটি টিম পাঠাবে। এছাড়া তল্লাশি কুকুর এবং উদ্ধারকাজের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র পাঠানো হবে বলেও জানানো হয়।

এদিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আজিজ আখানাউচ জানিয়েছেন, বিভিন্ন এলাকায় সহায়তার বিষয়ে তিনি সোমবার জরুরি বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, যেসব নাগরিক তাদের বাড়ি-ঘর হারিয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

ভূমিকম্পে রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে দেশটির বহু গ্রাম। তেমনই এক গ্রামের নাম তাফেঘাঘতে। অ্যাটলাস পর্বতমালা সংলগ্ন গ্রামটি পরিদর্শনে গেলে বিবিসি টিমের সঙ্গে প্রথম যে বাসিন্দার দেখা হয়, তিনি বলেন, এই গ্রামের মানুষজন হয় হাসপাতালে, না হয় মৃত।

ধ্বংসস্তূপ পার করে ওপরের দিকে উঠতে উঠতেই বোঝা যাচ্ছিল, কেন গ্রামটির কেউ নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি। ইট-পাথরের তৈরি গ্রামের পুরোনো ধাঁচের বাড়িগুলো কোনোভাবেই এই মাত্রার ভূমিকম্প সামাল দেওয়ার মতো ছিল না। গ্রামটির সঙ্গে লাগোয়া পাহাড়ি রাস্তার মোড়ে একটি বড় তাঁবুতে বেশ কয়েকটি পরিবার একসঙ্গে অপেক্ষা করছিল। সবদিক থেকেই শোনা যাচ্ছিল অবিরাম কান্নার আওয়াজ।

গত শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ১১টার কিছু পরে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে নিহত অধিকাংশ লোকজন দুর্গম পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা, যেখানে পৌঁছানো খুব কঠিন। ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মরক্কোর জনপ্রিয় পর্যটন শহর মারাকেশ।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর মরক্কোয় হতাহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। চলছে উদ্ধার অভিযান। তবে আফটারশকের কারণে সেখানকার মানুষের আতঙ্ক কমছে না। এমন পরিস্থিতিতে ঘরে ফিরতেও ভয় পাচ্ছে অনেকে।

বাইরে থাকতেই স্বস্তিবোধ করছেন তারা। অন্যদিকে, অনেকেই সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে ওই স্কয়ারে যারা থাকছেন, তাদের সহায়তা করার চেষ্ট করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পের পর আরও বেশ কয়েকবার মৃদু কম্পন (আফটারশক) অনুভূত হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগই ছিল ৫ মাত্রার।

এদিকে জেনেভাভিত্তিক জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল গত সোমবারের অধিবেশনে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে। এর আগে ১৯৬০ সালে দেশটিতে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে ১২ থেকে ১৫ হাজার প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন