ভারতের কেরালা। সেখানকার দুই সমকামী নারী তাদের ‘বিয়ের ফটোশুট’ শেয়ার করেছেন। এ বছরের শুরুর দিকে তারা সংবাদ শিরোনাম হয়েছিলেন। এই দুই যুবতীর নাম আদিলা নাসরিন এবং ফাতিমা নুরা। দু’যুবতীর অন্তরঙ্গতার খবর জানতে পেরে তাদের পরিবারের সদস্যরা জোর করে তাদেরকে আলাদা করে দেয়। কিন্তু দক্ষিণের রাজ্য কেরালার এক কোর্ট তাদেরকে আবার পুনর্মিলিত করে। তখন এ নিয়ে বিস্তর রিপোর্ট প্রকাশ পায়। দুই যুবতীর পরিবারের পক্ষ থেকে যে বাধা এসেছিল, তার বিরুদ্ধে তারা আদালতে পিটিশন করেন। ফলে গত মাসে আবার তারা সংবাদ শিরোনাম হন। এ সময় তারা বিয়ের ফটোশুটের কারণে।
অধিকারকর্মী এবং এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের কয়েক দশকের আইনি লড়াই শেষে ২০১৮ সালে সমকামী বিয়ে অপরাধ নয় বল রায় দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। বছরে পর বছর, এ সম্প্রদায়ের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। তবে তারা এখনও নানা রকম প্রতিবন্ধকতার মুখে। তাদেরকে মেনে নেয়া হয় না। এসব বিষয় জানেন নুরা এবং নাসরিন। তারা বলেন, এখনও নুরার পরিবার থেকে তাদেরকে আলাদা হওয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে।
ভারতে সমকামী বিয়েতে এখনও কোনো আইনি বৈধতা নেই। তবে দিল্লি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি এখনও বিবেচনাধীন আছে। তবে বহু সমকামী যুগল এরই মধ্যে এমন বিয়েতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা এমন প্রতিশ্রুতিতে অংশগ্রহণ করছে। নুরা এবং নাসরিনকে একসঙ্গে থাকার অনুমোদন দিয়েছে কেরালা হাইকোর্ট। তবে বিবাহিত দম্পতি ভারতে যেসব সুযোগসুবিধা এবং অধিকার ভোগ করেন, তারা তা পাবেন না। নাসরিন বলেন, আমরা যেকোনো ফরম পূরণ করতে গেলে সেখানে স্বামী, স্ত্রী বা বাবার নাম জানতে চাওয়া হয়। কাজে এবং সর্বত্র আমাদেরকে পিতার নাম ব্যবহার করতে হয় এখনও। সম্প্রতি আমরা একটি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানেও আমাকে পিতার নাম ব্যবহার করতে হয়েছে। এটা হতাশাজনক।
নুরা এবং নাসরিনের সাক্ষাৎ একটি হাইস্কুলে। এরপর তারা ঘনিষ্ঠ হতে থাকেন। তাদের পরিবার কেরালার বিভিন্ন স্থানে বসবাস করার কারণে স্কুল ত্যাগ করতে হয়। পরিচয়ের তিন বছরের মধ্যে তারা আলাদা হয়ে যান। তাদের মধ্যে মাঝে মাঝে ফোনে কথা হতো। চ্যাটিং করতেন। এক পর্যায়ে সাপোর্ট গ্রæপর সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা। বলা হয়, প্রথমে শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করে একটি কাজের ব্যবস্থা করতে। অন্যরাও তাদেরকে এই পরামর্শ দিয়েছেন। এখন তাদের বয়স ৪০ বছর। তারা এখনও অপেক্ষা করছেন একে অন্যকে বিয়ে করবেন।