বেশ কিছুদিন ধরে ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে ‘লাভ জিহাদের’ দোহাই দিয়ে মুসলিম ছেলেদের হিন্দু মেয়েদের বিয়ে করা থেকে বিরত রাখতে কঠোর আইন করেছে সেখানকার রাজ্যসরকার।
যোগী আদিত্যনাথ সরকারের অভিযোগ, মুসলিম ছেলেরা হিন্দু মেয়েদের ভুল বুঝিয়ে বিয়ের পর ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করছে। এ কারণেই ‘লাভ জিহাদ’ ঠেকাতে কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে স্থানীয় সরকার।
কিন্তু এবার এর উল্টো সংস্করণ দেখা গেল উত্তরপ্রদেশে। সেখান এক মুসলিম তরুণী ঘোষণা দিয়েছে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে হিন্দু স্বামীর সঙ্গে ঘর করতে রাজি সে! শুনতে অবাক লাগলেও এমন ঘটনাই ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আউরিয়া জেলার সেনগানপুর গ্রামে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে একজন মুসলিম যুবতীর এই দাবিকে উলটপুরাণ বলেই অভিযোগ করছে করছে হিন্দুত্ববাদীরা। তাদের দাবি, এতদিন হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করতে শোনা যেত মুসলিম যুবকদের। কিন্তু, এবার হিন্দু যুবকদেরও ফাঁদে ফেলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের আউরিয়া জেলার সেনগানপুর গ্রামের এক মুসলিম তরুণী পাশের কুলগাঁও গ্রামের আকাশ নামে এক হিন্দু যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যান। এরপরই মেয়েটির বাবা ওই যুবকের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন আয়েনা থানায়। তার ভিত্তিতে তদন্ত করতে নেমে পুলিশ জানতে পারে গত ১৪ অক্টোবর নয়াদিল্লির একটি মন্দিরে গিয়ে আর্য সমাজের রীতি মেনে বিয়ে করেছেন ওই যুবক-যুবতী। বিয়ের সময় ছেলেটির পরিবারও সেখান উপস্থিত ছিল। এই খবর পাওয়ার পরই ওই দম্পতিকে আটক করে আদালতে হাজির করে পুলিশ। সেখানে বিচারকের সামনে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওই মুসলিম যুবতী বলেন, এখনও তিনি পরিবারের সঙ্গে বাড়ি ফিরতে চান। তবে যদি তার হিন্দু স্বামী ইসলাম ধর্মকে গ্রহণ করতে রাজি হন তাহলে তিনি ওই যুবকের সঙ্গে থাকতে রাজি আছেন।
এ প্রসঙ্গে আয়েনা থানার পুলিশ কর্মকর্তা ললিত কুমার জানান, মেয়েটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবক-যুবতীকে আটক করে আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালতে মেয়েটি তাকে অপহরণের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করলেও নিজের পরিবারের সঙ্গে থাকবেন বলে জানান। তাই বুধবার তাকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে যুবকটির ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা এখনও ঠিক হয়নি।