আদালতে দায়ের করা এক বিবৃতিতে বিহার পুলিশ বলে, সেদিন নাসিম কোরায়শি ওপর কমপক্ষে ২০ জনেরও মানুষ হামলা চালায়। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই নাসিমের মৃত্যু হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঘটনার দিন ভাতিজা ফিরোজ কোরায়শির সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন নাসিম কোরায়শি। হিন্দু হাতে নিহত ওই ব্যক্তি হলেন নাজিব কোরায়শি। ওই সময় হঠাৎ করেই আশপাশে থাকা ১৫-২০ জন লোক তাদের ওপর হামলা চালায়।
ফিরোজ কোরায়শি বলেন, হামলাকারীরা আমাদের ঘিরে ধরে বলতে থাকে, এরা গরু নিয়ে কাজ করে। এ কথা বলেই লোকগুলো আমাদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে আমি পালিয়ে আসতে পারলেও আমার চাচা ফিরে আসতে পারেননি। গণপিটুনিতে তার নির্মম মৃত্যু হয়। আমি স্থানীয় থানায় গিয়ে সাহায্য চাইলেও পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলা হয়।
‘পরে থানা থেকে ঘটনাস্থলে এসে দেখি, চাচার নিথর দেহ পড়ে আছে। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় দারোদা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চাচাকে সিয়ন সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা চাচাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
ভারতের কিছু অংশে প্রকাশ্যে গরুর মাংস কেনা ও খাওয়া নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার। তাছাড়া ভারতের অধিকাংশ হিন্দু গরুকে দেবতা বলে মানে, এ জন্য গরু হত্যা বা খাওয়াকে তারা অপরাধ বলে মনে করে।
সম্প্রতি গো হত্যার অভিযোগে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম ও হিন্দু বর্ণপ্রথার নিম্ন শ্রেণির নাগরিককে ঘন ঘন আক্রমণের শিকার হয়েছে। কট্টরপন্থি হিন্দু গোষ্ঠীগুলো ভারতজুড়ে গোহত্যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবিও জানিয়ে আসছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বলছে, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দেশটির কট্টর হিন্দু গোষ্ঠীগুলো গরু হত্যা বা খাওয়া রোধে নিজেদের মতো করে আইন বানাতে শুরু করেছে।