ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় তিন হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সংক্রমণের চিত্র ঊর্ধ্বমুখী দেখা যাচ্ছে। এতে সংক্রমণের নতুন তরঙ্গের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আজ বুধবার জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয় দুই হাজার ৯২৭ জন।
এ সময়ে মারা যায় ৩২ জন। আগের দিন মঙ্গলবার শনাক্ত হয় দুই হাজার ৮৩ জন।
বুধবার ভারতের গণমাধ্যম জানায়, দুই সপ্তাহ আগেও দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ৮৮। এর আগে গত ৪ এপ্রিল ভারতে মহামারির প্রায় দুই বছর পর করোনায় আক্রান্ত রোগী এক হাজারের নিচে নেমে এসেছিল।
ভারতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী পাওয়া যাচ্ছে মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, মিজোরাম, কেরালা, কর্ণাটক ও রাজধানী নয়াদিল্লিতে। এর মধ্যে নয়াদিল্লিতে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। নয়াদিল্লির স্বাস্থ্য দপ্তর মঙ্গলবার জানায়, সেখানে ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয় এক হাজার ২০৪ জন রোগী এবং মৃত্যু হয় একজনের। বলা হচ্ছে, সেখানে টানা পাঁচ দিন এক হাজার রোগী শনাক্ত হচ্ছে। দিল্লির পর সংক্রমণে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী হরিয়ানা। সেখানে সর্বশেষ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫১৭।
ভারতে নতুন তরঙ্গের আশঙ্কা সামনে রেখে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির চ্যালেঞ্জ এখনো শেষ হয়ে যায়নি এবং গত দুই সপ্তাহে ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া তিনি বলেন, টিকা প্রয়োগ এখনো সবচেয়ে বড় সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ।
কভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়ার পর বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে একটি আলোচনায় অংশ নিয়ে গতকাল নরেন্দ্র মোদি এসব কথা বলেন। এ সময় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ চলমান সংক্রমণের বিভিন্ন চিত্র নিয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ছয় থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে কোভ্যাক্সিন ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, গত মার্চে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের টিকাদান শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ছয় থেকে ১৩ বছর বয়সীদেরও টিকাদান শুরু হয়েছে।
বুধবারের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সব যোগ্য শিশুকে টিকা দেওয়া। এ জন্য স্কুলগুলোতে বিশেষ অভিযান প্রয়োজন হবে। শিক্ষক ও অভিভাবকদের এ ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। ’
বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি জানান, ভারতের ৯৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কমপক্ষে প্রথম ধাপের টিকা পেয়েছেন। এ ছাড়া ১৫ বছরের বেশি বয়সের প্রায় ৮৪ শতাংশ মানুষ দুই ধাপের টিকাই পেয়েছে।