ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের পুলিশ বাল্যবিবাহ ঠেকাতে এখন পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার করেছে। বাল্যবিবাহ করেছে এমন কম বয়সী ছেলেরা যেমন এর মধ্যে আছে, তেমনই ধরা হয়েছে তাদের পরিবার আর কাজী-পুরোহিত যারা ওইসব বিয়ে দিয়েছেন তাদেরও।
যেসব জেলায় অভিযান চলছে, তার মধ্যে মুসলমান-প্রধান জেলাগুলিও আছে। রাজ্যের একটি মুসলিম সংগঠন বাল্যবিবাহ রোধে এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে, কিন্তু তারা বলছে শুধু পুলিশ দিয়ে নয়, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে।
তবে আসামের এক মুসলিম রাজনীতিবিদ ও সংসদসদস্য এসব গ্রেফতারের বিরোধিতা করছেন। অন্যদিকে যেসব পরিবারের পুরুষ বা কমবয়সী ছেলেদের পুলিশ নিয়ে গেছে, সেইসব পরিবারের নারীরা বা কমবয়সী স্ত্রীরা পড়েছেন বিপদে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি বিয়ের বয়স এবং কম বয়সে মাতৃত্বের বিপদ নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। সেই সূত্রেই তিনি এই সপ্তাহের গোড়ার দিকে ঘোষণা করেন যে বাল্যবিবাহের অপরাধে যুক্তদের একটা তালিকা করা হয়েছে।
আসাম পুলিশ বলছে, ৪০০৪টি বাল্যবিবাহের মামলা রুজু হয়েছে। এইসব মামলায় অভিযুক্ত আট হাজারেরও বেশি মানুষ।
সেই সব মামলার ভিত্তিতে শুক্রবার থেকে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করে। শনিবার দুপুরে টুইট করে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, “আজ সকাল পর্যন্ত ২২১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অভিযান ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত চলবে।
শনিবার সন্ধ্যায় আসাম পুলিশকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মোট গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৫৮।
যাদের ধরা হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ রোধ আইনে মামলা হয়েছে, কিন্তু যেসব ঘটনায় বিয়ে হওয়া কিশোরীর বয়স ১৪-এর কম, সেইসব ক্ষেত্রে শিশুদের ওপরে যৌন নির্যাতনরোধ আইনেও মামলা করা হচ্ছে।
আসাম পুলিশের মহানির্দেশক জি পি সিং বলছেন,‘গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৫২ জন হলেন কাজী এবং পুরোহিত, যারা বাল্যবিবাহ দিয়েছিলেন। যত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার মধ্যে সবথেকে বেশি সংখ্যক ধরা পড়েছে বিশ্বনাথ, বাকসা, বরপেটা, ধুবরি, হোজাই আর কোকরাঝাড় জেলাগুলি থেকে।’