ভারতের হাওড়ায় পরিবারের চারজনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুনের পর আটক পল্লবী ঘোষের বক্তব্য ছিল চমকে দেওয়ার মতো। পল্লবী পুলিশকে জানান, রেগে গেলে তার হুঁশ থাকে না, অনেককে খুন করতে পারেন তিনি। এই পল্লবীর মধ্যে বহুল পরিচিত ‘ববিট সিনড্রোম’-এর লক্ষণ দেখছেন তদন্তকারীরা। শুধু খুন করেই থামেননি পল্লবী।
লোরেনা ববিটের সেই ঘটনা বিশ্বে আলোড়ন তোলে। এমনকি এই ববিটদের নিয়ে একাধিক ছবিও তৈরি করেছে হলিউড। তার পর থেকেই এমন আক্রোশ গোয়েন্দা এবং মনোবিদদের কাছে ববিট সিনড্রোম নামে পরিচিত। হাওড়ার ঘটনায় পল্লবীর মধ্যেও লোরেনার ছায়া দেখছেন কেউ কেউ। পল্লবী নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন সব কথা।
জানা গেছে, পরিবারের প্রধান অর্থাৎ বাবা, শিশিরকুমার ঘোষের সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাইয়ের ঝামেলা ছিল। দাদা দেবাশিসের সঙ্গে ভাই দেবরাজের ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। বদমেজাজি দেবরাজ বাড়িতে ভাঙচুরও চালাতেন। এমনকি মারধরও করতেন বাবা, দাদা ও মাকে।
বছর দশেক আগে দেবরাজ ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পল্লবীর। বড় ছেলে দেবাশিস ও তার স্ত্রী পরিবারের দেখাশোনা করতেন বলে তাদের বেশি ভালোবাসতেন শিশিরবাবু। অবসরের পর বেশ কিছু টাকা তিনি বড় ছেলে ও তার স্ত্রীকে দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এ নিয়েই রাগ ছিল দেবরাজ ও পল্লবীর।
তবে এখানেই শেষ নয়। দেবরাজের স্ত্রী পল্লবীকে নাকি কুপ্রস্তাব দিতেন দাদা দেবাশিস। এমনকি অত্যাচারও করতেন। তা নিয়ে আবার টাকার লেনদেন হতো পরিবারের মধ্যে। পুলিশ জানতে পেরেছে, পেশায় গাড়িচালক দেবাশিস, ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের বিনিময়ে ভাই ও পল্লবীকে টাকা দিতেন।
হত্যার দিন বুধবার রাতেও দেবরাজ ও পল্লবীকে দুই হাজার টাকা দিতে এসেছিলেন দেবাশিস। তখন তুঙ্গে উঠেছে বাড়ির ভাগ নিয়ে বিবাদ। তার মধ্যে দেবাশিসের এই টাকা দিতে আসা দেখে প্রচণ্ড রেগে যান পল্লবী। রাগের বশে স্বামী দেবরাজের সঙ্গে দেবাশিসকে খুন করেন তিনি। দেবাশিসের ওপর রাগ থেকে হত্যার পর পল্লবী তার যৌনাঙ্গও কেটে নেন। দেবাশিসের স্ত্রী রেখাকেও কুপিয়ে হত্যা করেন পল্লবী।