প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য উপলক্ষে ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার’স চত্বরে জড়ো হয়েছেন লাখো শোকার্ত মানুষ। অন্তিম শ্রদ্ধা জানাতে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের দেড় শতাধিক দেশের প্রতিনিধি, রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, ইউরোপের রাজপরিবারের সদস্যসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় শুরু হয় শেষ প্রার্থনাসভা। ব্যাসিলিকার বিশাল চত্বর ও মূল সড়কে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ এই আয়োজনে অংশ নেন বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান। প্রায় ১,৩০০ বছরের মধ্যে প্রথম অ-ইউরোপীয় পোপ ফ্রান্সিসের বিদায়ে সৃষ্ট শোকের আবহ ছিল গভীর ও আবেগঘন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া, যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার স্ত্রী, ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোসহ আরও অনেকে।
এছাড়া ইতালি, ফিলিপিন্স, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, পোল্যান্ড ও গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাজ্য ও নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীসহ ইউরোপের বিভিন্ন রাজপরিবারের বহু সদস্য প্রার্থনায় অংশ নেন।
ফ্রান্সিসের মরদেহ তিনদিন ধরে শায়িত ছিল ষোড়শ শতকের সেইন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকায়। বুধবার সকাল থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ মানুষ তার কফিনের পাশে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। শনিবার সকালে কফিনবন্দি মরদেহ ব্যাসিলিকার প্রধান দরজা দিয়ে বের করে এনে শুরু হয় অন্তিম প্রার্থনা।
প্রার্থনা সভায় প্রয়াত পোপের কফিনের এক পাশে ছিলেন বিদেশি অতিথিরা, অন্য পাশে লাল টুপি পরা শতাধিক কার্ডিনাল। এক ঘণ্টা চলা এ প্রার্থনাসভা পরিচালনা করেন ইতালির ৯১ বছর বয়সী পুরোহিত জিওভান্নি বাত্তিস্ত রে।
আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে গত সপ্তাহে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পরপরই দেড়শ কোটির বেশি অনুসারীর ক্যাথলিক চার্চে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী বিদায় রীতিনীতি।
প্রার্থনা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সান্তা মারিয়া ম্যাগিওরের ব্যাসিলিকায়। সেখানেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়। দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের পক্ষে সরব থাকা, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও অভিবাসী সুরক্ষায় সোচ্চার থাকা এই পোপ বিশ্বজুড়ে পেয়েছিলেন ব্যতিক্রমী সম্মান।
সমাধিস্থ করার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ৯ দিনের শোকপর্ব। এরপর নজর যাবে নতুন পোপ নির্বাচনের দিকে।