গত মার্চ মাসে ‘দুর্ঘটনাক্রমে’ পাকিস্তানের দিকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে গিয়েছিল ভারতের। এতে শত্রুভাবাপন্ন দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আবারও উত্তেজনা তৈরি হয়। ওই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর তিন কর্মকর্তাকে।
গত ৯ মার্চ রক্ষণাবেক্ষণ কাজের সময় ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে’ পাকিস্তানের দিকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে গিয়েছিল বলে দাবি করেছে ভারত। এ ঘটনায় গভীর দুঃখপ্রকাশের পাশাপাশি কেউ হতাহত না হওয়ায় স্বস্তিও প্রকাশ করেছিল নয়াদিল্লি।
তবে ‘চিরশত্রু’ দেশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যাওয়ার ঘটনা যে পাকিস্তান সহজভাবে নেয়নি, তা বলাই বাহুল্য। তৎক্ষণাৎ ভারতের ভারতের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানায় ইসলামাবাদ।
ঘটনার পরের দিন গত ১০ মার্চ পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল বাবর ইফতিখার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, একটি ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করে খানেওয়াল জেলার মিয়া চান্নু এলাকার কাছাকাছি ভূপাতিত হয়েছে। যার ফলে, আশপাশে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ কর্মকর্তা বলেন, ভারতের সিরসায় উড্ডয়নস্থল থেকে শুরু করে মিয়া চান্নুর কাছে পড়ার আগপর্যন্ত উড়ন্ত বস্তুটির পুরো গতিপথে সূক্ষ্ম নজর রেখেছিল পাকিস্তানি বিমানবাহিনী। বস্তুটি ভারত-পাকিস্তান উভয়ের আকাশপথে অনেক আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী ফ্লাইটকে ঝুঁকিতে ফেলেছিল।
পাকিস্তানি ডিজি আইএসপিআরের ভাষ্যমতে, এটি তাদের (ভারতের) বিমান চলাচলের নিরাপত্তায় অবজ্ঞা এবং প্রযুক্তি ও পদ্ধতিগত দক্ষতার অভাবকে প্রতিফলিত করে। এটি আকাশপথে অনেক বড় বিপর্যয়ের পাশাপাশি স্থলেও প্রচুর বেসামরিক লোক হতাহতের কারণ হতে পারতো।
এ ধরনের ‘অবহেলার অপ্রীতিকর পরিণতি’ সম্পর্কে সচেতন হতে এবং এর পুনরাবৃত্তি এড়াতে নয়াদিল্লিকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ইসলামাবাদ।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ভারতীয় বিমানবাহিনী জানিয়েছে, ৯ মার্চের ওই ঘটনায় দায়ী তিন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তদন্তে দেখা গেছে, ওই কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি’ থেকে বিচ্যুতির কারণেই ‘দুর্ঘটনাক্রমে’ ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে গিয়েছিল।
পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ভারতের ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি হয়েছে রাশিয়ার সহযোগিতায়।
পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪০ হাজার ফুট ওপর দিয়ে শব্দের চেয়ে তিনগুণ গতিতে উড়ে প্রায় ১২৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে আঘাত করেছিল।