নিজের তিন সন্তান। ফলে নিয়ম অনুযায়ী পৌরসভার নির্বাচনে লড়াই করার অনুমতি মিলছে না। তাই আসন্ন পৌর নির্বাচনে লড়তে ‘স্ত্রী চাই’ বলে বিজ্ঞাপন দিলেন ভারতের মহারাষ্ট্রের ঔরাঙ্গাবাদ শহরের এক ব্যক্তি। শহরের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এমন এক বিলবোর্ডে হইচই পড়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন সমালোচনা চলছে এই বিজ্ঞাপন ঘিরে।
জানা গেছে, জমি-বাড়ির ব্যবসায়ী রমেশ বিনায়করাও পাটিলের বিয়ে হয়েছে কয়েক বছর আগে। তিন সন্তানও আছে তার। আর এটাই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আসন্ন ঔরঙ্গাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোারেশন নির্বাচনে। কারণ স্থানীয় পৌর-আইন অনুযায়ী দুইয়ের বেশি সন্তান থাকলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে না। ফলে বিনায়ক বা তার স্ত্রী কেউই নির্বাচনে লড়াই করার সযোগ পাচ্ছেন না। এ কারণেই শনিবার শহরের ব্যস্ততম মোড়ে একাধিক ব্যানার বিলবোর্ড টাঙিয়েছেন বিনায়করাও।
সেখানে তিনি দাবি করেছেন নির্বাচনে প্রার্থী করতে চাই স্ত্রীকে। ইচ্ছুক বিবাহযোগ্যা কন্যারা যোগাযোগ করুন। বয়স হতে হবে ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। পাত্রী যে কোনও ধর্মে বিশ্বাসী হলেই হবে।
ওই বিজ্ঞাপনে নিজের ফোন নাম্বারও দিয়েছেন তিনি। আর এই বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর রবিবার সকাল থেকেই তার কাছে একের পর এক ফোন আসছে বলে দাবি বিনায়করাওয়ের। এমনকি পাত্রীর অভিভাবকরাও তার সাথে যোগাযোগ করছেন। আর এক্ষেত্রে তাকে সহায়তা করছেন তার প্রথম স্ত্রীও, এখনও পর্যন্ত স্বামীর এই কর্মকান্ডে স্ত্রীর কোন আপত্তি নেই বলেও জানিয়েছেন বিনায়করাও।
তিনি জানান, তিনি ঔরঙ্গাবাদ পৌরসভার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান, কিন্তু তিন সন্তান থাকায় আইন অনুযায়ী তা সম্ভব হচ্ছে না। আর এই কারণেই শহরের ব্যস্ততম মোড়ে এই পোস্টার লাগিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত শতাধিক ফোন এসেছে তার কাছে। অনেকে আবার বিনায়করাওয়ের সাথে তাদের মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরেই সেখানকার রাজনৈতিক দল ‘মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা’র ঔরঙ্গাবাদ টাউন সহ-সভাপতি রয়েছেন বিনায়করাও। যদিও দলে ততটা সক্রিয় নন, ফলে দলের কোনো শীর্ষ স্থানীয় নেতার সাথে যোগাযোগও করতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘যদি তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে পারেন, তবে ওই স্ত্রীকে ঔরঙ্গাবাদ পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী করবেন এবং তাকে জিতিয়েও আনবেন। আর এই কাজে কোনো আপত্তি নেই তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী’র। তিনি কেবল সমাজসেবা করতে চান।
বিনায়করাও বলেন, ‘প্রতিটি বড় রাজনৈতিক দলের নেতারাই ঔরঙ্গাবাদ পৌরসভার নির্বাচনে তাদের আত্মীয়-পরিজনদের প্রার্থী করেছেন। সেই কারণে তিনিও চাইছেন ভরসাযোগ্য কাউকে নির্বাচনে প্রার্থী করতে ও জিতিয়ে আনতে। যদিও দুই সন্তান নিয়ে সরকারি নীতির কোনো বিরোধিতাই করেননি তিনি। সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আদালতে যেতেও নারাজ। আর সেই কারণেই দ্বিতীয় স্ত্রী চাইছেন।
তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কোনো দলের প্রতীকে তিনি নির্বাচনে লড়াই করবেন, তা এখনও স্থির করেননি। বিনায়করাও জানান শিবসেনা, মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনাসহ অনেকের সাথেই যোগাযোগ রেখে যাচ্ছি। যে দল টিকিট দেবে তাদের হয়ে স্ত্রীকে দাঁড় করাবো। বিয়ের ক্ষেত্রে ধর্ম কোনও বাধা হবে না বলেও জানিয়েছেন বিনায়করাও।