ভারী তুষারপাত আর তুষারঝড়ে কাবু স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদসহ পুরো স্পেন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া অঝোরধারার তুষারপাতে ঢাকা পড়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। দেশটির রাজধানী মাদ্রিদসহ কয়েকটি রাজ্যে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা।
নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় রবিবার মধ্যরাতের পর তুষারপাতের পরিমাণ আরও বাড়ার কথা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, এবারের তুষারপাত নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে। কোনো কোনো জায়গায় তিন ফুটের বেশি বরফের স্তূপ জমবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।
বরফে ঢাকা পড়েছে স্পেনের বিভিন্ন অঞ্চল। তীব্র তুষারপাতে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। রাস্তায় গাড়ি আটকে সৃষ্টি হয়েছে যানজটের। কোথাও কোথাও গাড়ি ঠেলে নিতে বাধ্য হন যাত্রীরা। সড়কের পাশাপাশি রেল যোগাযোগও ব্যাহত হয়। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া বিভাগ।
প্রচণ্ড তুষারপাতের কারণে সোমবার দুপুর থেকেই জনজীবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। সর্বদা উৎসবের নগর হিসেবে পরিচিত মাদ্রিদ পরিণত হয়েছে ভুতুড়ে জনপদে। শুক্রবার রাত ১০টার পর থেকে মাদ্রিদের সড়কপথে জরুরি বিভাগের যানবাহন ছাড়া গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। নগরের গণপরিবহনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে সোমবার সকালে গণপরিবহনও চালু হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
তুষারের কারণে মাদ্রিদ বারাখাস বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়। এয়ারলাইনসগুলোর ফ্লাইট বাতিল করেছে। রাস্তাঘাট বরফে ঢেকে যাওয়ায় পরিষ্কারে ব্যস্ত সময় পার করেন বেসামরিক সেবাকর্মীরা। তবে কোথাও কোথাও অনেককে পরিবার-পরিজন নিয়ে বড়দিন পরবর্তী হোয়াইট ক্রিসমাসে মেতে উঠতে দেখা যায়। বরফের মধ্যে স্কি করে আনন্দ করেন তারা।
তারা জানান, শিশুরা খুব আনন্দিত। তারা সবাই এই মৌসুমের তুষারপাত খুব উপভোগ করছে। তীব্র তুষারপাতের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন প্রবাসী আব্দুর রহমান।
তিনি জানান, রাজধানী মাদ্রিদসহ পুরো স্পেন জনশূন্য। মাদ্রিদের এমন জনমানবহীন চেহারা কখনো দেখেননি। একাধিক প্রবাসী জানিয়েছেন, তীব্র তুষারপাতের জন্য ব্যাবসা-বাণিজ্যসহ তাঁদের আয়-রোজগার বন্ধ।
হিমশীতল দমকা বাতাসে বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে করোনার কারণে বিভিন্ন বিধিনিষেধ থাকায় মানুষের সংখ্যা বাইরে কম বলে সড়কের ট্রাফিক অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল।