তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন ‘দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাঝাগাম’ (ডিএমকে) সভাপতি এম.কে.স্ট্যালিন। শুক্রবার সকালে চেন্নাইয়ে রাজভবনে তাকে শপথগ্রহণ বাক্য পাঠ করান রাজ্যটির রাজ্যপাল বানোয়ারিলাল পুরোহিত।
নিজের রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথম তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ৬৯ বছর বয়সী স্ট্যালিন। স্বভাবতই এদিনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী দূর্গা স্ট্যালিন এবং প্রথম নির্বাচিত বিধায়ক পুত্র উদয়নিধি। জয়ের আনন্দে স্ত্রী দুর্গা স্ট্যালিনের চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লোকসভার সাংসদ কানিমোঝি, ডিএমকে’এর ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে) প্রমুখ। যদিও করোনার আবহে এই অনুষ্ঠান ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত।
মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণের পর ট্যুইট করে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
স্ট্যালিনের সাথেই নতুন মন্ত্রিসভার আরও ৩৩ জন সদস্য এদিন শপথ নেন। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র, পুলিশসহ বেশকিছু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব স্ট্যালিন নিজের হাতে রাখছেন স্ট্যলিন। অন্য মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন পালানিভেল থিয়াগারাজন (অর্থ), দুরাই মুরুান (পানি সম্পদ), মা সুব্রাহ্মনিয়াম (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ), পি.কে. শেখরবাবু (হিন্দু ধর্ম ও দাতব্য বৃত্তিদান), আনবিল মহেশ পোয়ামোঝি (স্কুল শিক্ষা), ভি. সেন্থিল বালাজি (বিদ্যুৎ, আবগারি), কে.এন.নেহেরু (পৌরসভা প্রশাসন), কে.কে.এস.এস.আর রামচন্দ্রণ (রাজস্ব), কে.পনমুডি (উচ্চশিক্ষা), ই.ভি.ভেলু (পাবলিক ওয়ার্কস), এম.আর.কে. পনিরসেলভম (কৃষি ও কৃষক কল্যাণ), থাঙ্গাম থেন্নারাসু (শিল্প ও আইন), এস.আর.রাজাকান্নাপ্পান (পরিবহন), কে.রামচন্দ্রন (বন), এস.মুথুস্বামী (আবাসন), সি.ভি.গণেসন (শ্রম), জি.কে.এস.মস্থান (সংখ্যালঘু উন্নয়ন) প্রমুখ।
এই মন্ত্রিসভায় দুইজন নারীও জায়গা পেয়েছেন, তারা হলেন পি.গীতা জীবন (সামাজিক কল্যাণ ও নারী ক্ষমতায়ণ), এন.কয়ালভিঝি সেলভারাজ (আদি দ্রাবিড়া কল্যাণ)।
গত মঙ্গলবার চেন্নাইয়ে দলের সদ্য জয়ী বিধায়কদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। সেখানে সর্বসম্মত ভাবে স্ট্যালিনকে ডিএমকে’এর বিধানসভার পরিষদীয় দলের নেতা নির্বাচিত করা হয়। বুধবার সকালে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সাথে দেখা করেন স্ট্যালিন এবং সাংবিধানিক রীতি মেনে ১৩৩ জন জয়ী বিধায়কদের স্বাক্ষরিত সমর্থনের একটি চিঠি রাজ্যপালের হাতে তুলে দিয়ে সরকার গঠনের দাবি জানান।
প্রায় এক দশক ধরে তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করা ডিএমকে এবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যটিতে ক্ষমতায় এসেছে। গত ৬ এপ্রিল দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যটির ২৩৪ টি বিধানসভার কেন্দ্রে একটি মাত্র দফায় ভোটগ্রহণ হয়। ২ মে ছিল তার ভোটগণনা।
সেখানে ডিএমকে নেতৃত্বাধীন ‘সেকুলার প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স’(ডিএমকে-কংগ্রেস-ভিসিকে-বামফ্রন্ট) পায় ১৫৯ টি আসনে, এর মধ্যে ডিএমকে একাই পায় ১৩৩ টি আসন। অন্যদিকে ৭৫ আসনে জয় পায় ‘অল ইন্ডিয়া আন্না মুনেত্রা কাঝাগাম’ (এআইএডিএমকে) নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। যেখানে এআইএডিএমকে ৬৬ টি, বিজেপি ৪ এবং পিএমকে ৫ টি আসনে জয় পায়।