জুলাইয়ে আল কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে হত্যাকারী মার্কিন হামলার জন্য ইসলামাবাদের আকাশসীমা ব্যবহার করার বিষয়ে তালেবানের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। তালেবান অভিযোগ করেছিল পাকিস্তান সরকার তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করার জন্য আমেরিকাকে অনুমতি দিয়েছিল। আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা ইয়াকুব রবিবার বলেছেন যে আফগানিস্তানের আকাশসীমায় টহল দেওয়ার জন্য ড্রোনের অবৈধ ব্যবহার দেশের সীমানা লঙ্ঘনের সমান।
খামা প্রেস জানিয়েছে, রবিবার দুপুরে মোল্লা ইয়াকুব এবং তালেবানের সামরিক বাহিনীর চিফ অফ স্টাফ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের সময় এই বিবৃতি দেওয়া হয়। মুজাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মার্কিন ড্রোন পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে প্রবেশ করেছিল। ”প্রেস কনফারেন্স চলাকালীন, তালেবানের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে আমেরিকা আফগানিস্তানে প্রবেশ ও হামলার মাধ্যম হিসেবে পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করেছে। পূর্বে, আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একটি সিআইএ ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি লাইভ সম্প্রচারে খবরটি জানিয়েছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতে, একটি ড্রোন থেকে নিক্ষিপ্ত দুটি হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র আল-কায়েদা প্রধানকে হত্যা করে। তালেবানের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), ওরফে পাকিস্তানি তালেবান এবং পাকিস্তান সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতা করেছে। সম্প্রতি খাইবার পাখতুনখোয়ার সোয়াত উপত্যকায় নিষিদ্ধ গোষ্ঠীটি পুনরায় আবির্ভূত হওয়ার পরে ইসলামাবাদে বিপদের ঘণ্টা বেজেছে।তালেবান জঙ্গিরা কয়েক মাস আগে সোয়াত জেলার মাট্টা মহকুমার পাহাড়ের চূড়া দখল করেছিল বলে জানা গেছে, যার জেরে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
৭১ বছরের মিশরীয় জঙ্গিনেতা জওয়াহিরির মৃত্যুতে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে আল কায়দা। এই ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে দোহা চুক্তির শর্ত মোতাবেক আল কায়দাকে আশ্রয় না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদার দল। তবে পালটা তালিবানের বক্তব্য, কাবুলে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ওয়াশিংটন। এর ফল ভোগ করতে হবে আমেরিকাকে। এহেন পরিস্থিতিতে তালিব নেতৃত্ব পাকিস্তানের উপর অসন্তুষ্ট হলে ফল ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।