রাশিয়ার সেনা অভিযানে ইউক্রেনের চারিদিকে এখন বোমা আর বারুদের গন্ধ। বিকট শব্দে অনেকেরেই ঘুম ভাঙে, কেউ আবার সেই শব্দের সাথে জীবনের পাল উড়িয়ে দিয়েই একমুঠো অনিশ্চয়তা সাথে নিয়ে রোজ ঘুমাতে যায়। এ যেন জীবন-মৃত্যুর এক সাথে ছুটে চলা, দারুণ মেলবন্ধন।
অনিশ্চিত গন্তব্যেও থামে না জীবন। আপন নিয়মে আগায় জীবনের রথ, ছায়াপথ বেয়ে স্বপ্ন নামে। মৃত্যু উপত্যাকাতেই লাল গোলাপ হাতে নিয়ে দাঁড়ায় কেউ কেউ, শেষ থেকে আবার হয় শুরু, প্রণয় পরিণয়ে ওড়ে সুখের প্রজাপতি।
সংঘাত কবলিত দেশ ইউক্রেনে তেমন উৎসবে আর এগিয়ে চলার গল্প আছে। তেতিয়ানা নামের এক নারী বিয়ে করেছেন যুদ্ধ, বোমা আর বারুদের আস্তরণের মাঝে দাঁড়িয়ে।
তার বর্ণনায় সেই বিয়ের ঘটনা, ‘প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটা বজ্রপাত কিন্তু আকাশ ছিল পরিষ্কার এবং আমি বুঝতে পারলাম গোলা বর্ষণ চলছে।… প্রাসঙ্গিকভাবেই আমি ভাবলাম আমাদের বিয়েটা আপাতত বাতিল করা উচিত কিন্তু আমার বাগদত্তা আমাকে বলল, এই যুদ্ধের আমাদের পরিকল্পনা মাটি করার কোন অধিকার নেই।’
এভাবেই যুদ্ধকে পাশ কাটিয়ে বিয়ে পিঁড়িতে বসেন তেতিয়ানা দম্পতি। তার মতো আরও অনেকেই অনিশ্চয়তা সাথে নিয়ে শুরু করেছেন জীবনের নতুন অধ্যায়।
তেতিয়ানার এলাকায় রাশিয়ার সেনা অভিযানের প্রথম সপ্তাহে ১৬০০ বিয়ে নিবন্ধিত হয়েছে। যা ২০২০ সালের পুরো বছরের চেয়েও অনেকটা বেশি। ২০২০ সালে ওই এলাকায় ১৩০০ বিয়ে হয়েছিল।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রুশ আগ্রাসনের পাঁচ মাসে বিয়ে নিবন্ধন হয়েছে ৯১২০টি। যা ২০২১ সালের একই সময়ের চেয়ে আট গুন বেশি। এই সময়ে গেল বছর কিয়েভে বিয়ে নিবন্ধন হয়েছিল ১১১০টি।
আনাসতাসিয়া নামের এক যুবক, যার পরনে ছিল যুদ্ধের পোশাক, তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের সময় বিয়ে করা সাহসের কাজ এবং কঠিন পদক্ষেপও বটে। কারণ, আপনি জানেন না ভবিষ্যতে কী ঘটছে।’