নতুন নতুন বিষয় উদ্ভাবন বা আবিষ্কারের ক্ষেত্রে সুইডেন ইইউতে শীর্ষে এবং বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বলে এক জরিপে জানা গেছে। ইউরোপীয় কমিশনের সূচক ‘ইউরোপীয় উদ্ভাবন স্কোরবোর্ড’ অনুসারে, উদ্ভাবনের জন্য সুইডেন ইইউতে সেরা। অন্যদিকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের সংস্থা ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশনের (ডাব্লিউআইপিও) বার্ষিক জরিপ ‘বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচক’-এ সুইডেন সুইজারল্যান্ডের পরেই বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
উদ্ভাবনী সূচকে স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশ সুইডেনের শীর্ষস্থান পাওয়া প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে দেশটির সরকারি পরামর্শক সংস্থা ভিনোভার ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোরান মার্কলুন্ড বলেন, ১৮০০ শতকের শেষ দিক থেকেই একটি উদ্ভাবনী দেশ হিসেবে সুইডেনের সুদৃঢ় অবস্থানের বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি রয়েছে।
সরাসরি উদ্ভাবন ইস্যুর সঙ্গে যুক্ত ভিনোভার উদ্দেশ্য হচ্ছে, উচ্চমানের উদ্ভাবনের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।
সূচক অনুসারে, সুইডেনের প্রধান শক্তি মানবসম্পদ, উদ্ভাবনবান্ধব পরিবেশ এবং আকর্ষণীয় গবেষণার পরিবেশ। সুইডিশদের একটি বড় অংশ উচ্চশিক্ষিত। কর্মজীবনেও তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ভালো সুযোগ রয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, সুইডেনের মতো একটি ছোট জনসংখ্যার দেশের জন্য শুধু বাজার অর্থনীতির মাধ্যমে বড় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সে জন্য দেশটি শিক্ষার মান ও বিস্তৃতির ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রতিযোগিতায় টিকে রয়েছে।
গবেষণার জন্য সুইডেনের বার্ষিক বাজেট স্থিতিশীল এবং তুলনামূলকভাবে বেশি। প্রতি চার বছরে এবং নির্বাচনের বছরের মধ্যে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টিও এতে সহায়তা করেছে।
ভিনোভার শীর্ষ কর্মকর্তা গোরান মার্কলুন্ড আরো বলেন, ‘আমরা যে এত ভালো, তা মূলত সুইডিশ সংস্কৃতির কারণেই সম্ভব হয়েছে, যা আমরা দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে তুলেছি। ‘
তিনি বলেন, ‘শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে আমাদের দীর্ঘ ইতিহাস, গণতন্ত্র, মানুষ এবং আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি উচ্চ আস্থা ছাড়াও সামাজিক অংশীদারত্বের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়ার বিষয়গুলো উচ্চমানের উদ্ভাবনে বিনিয়োগের জন্য চমৎকার ক্ষেত্র তৈরি করেছে। ‘ সামাজিক বৈষম্য এবং দুর্নীতি উদ্ভাবনকে বাধাগ্রস্ত করে বলে মত দেন তিনি।
গোরান মার্কলুন্ড বলেন, যেসব দেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রতিবছর আর্থিক বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়, সেসব দেশে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বা গবেষণায় বিনিয়োগ করা বেশি কঠিন হয়।
ডাব্লিউআইপিওর বার্ষিক জরিপ অনুযায়ী ক্রমানুসারে বিশ্বের ১০টি উদ্ভাবনী দেশ হচ্ছে সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ডেনমার্ক ও জার্মানি।