ইরানে গত বছর নভেম্বর মাস থেকে অন্তত ৭০০ জন ছাত্রীকে স্কুলের ভেতর বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগ করা হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, মেয়েদের স্কুলে যাওয়া ঠেকাতে স্কুলগুলো বন্ধ করার উদ্দেশ্যে এমন কাজ করা হয়েছে। যদিও এই ঘটনায় কোনও ছাত্রীর মৃত্যু হয়নি। কিন্তু কয়েকশো ছাত্রীর শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হচ্ছে এবং অনেকে ক্লান্তিতে ভুগছে।
ইরানের উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে কিছু মানুষ চাইছে সব স্কুল বিশেষ করে করে মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হোক।’ যদিও তিনি পরে জানান, তার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ইরানের প্রসিকিউটর জেনারেল গত সপ্তাহে এক ঘোষণায় জানান, তিনি এ বিষয়ে ফৌজদারি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তাতে মনে হচ্ছে এটা পূর্ব পরিকল্পিত ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। অন্যদিকে এই নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।
প্রথম বিষ প্রয়োগের ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ৩০শে নভেম্বর। ওই দিন কোম নগরীর দ্য নূর টেকনিক্যাল স্কুলের ১৮ শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিতে হয়। তারপর থেকে আরও ১০টির বেশি গার্লস স্কুলে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
গত সপ্তাহে পশ্চিমাঞ্চলের লরেস্তান প্রদেশের বরুজার্ড শহরের চারটি স্কুলের অন্তত ১৯৪ ছাত্রীকে বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগ করা হয়। এবং মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী তেহরানের কাছেই পার্দিসের খাইয়াম গার্লস স্কুলের ৩৭ জন ছাত্রী বিষ প্রয়োগের শিকার হয়।
অসুস্থ হয়ে পড়া এসব ছাত্রীরা পরে জানিয়েছে, অসুস্থ হওয়ার আগে ছোট কমলালেবু বা পচা মাছের গন্ধের মত গন্ধ পাচ্ছিল। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে কোমের গভর্নর অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছে একশোরও বেশি মানুষ।
বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগের ঘটনায় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ব্যাখ্যার দাবী জানায় অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বাবা-মায়েরা। কয়েকজন অভিভাবক জানিয়েছেন, বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগের ফলে তাদের সন্তান কয়েক সপ্তাহ ধরে অসুস্থ।
বিক্ষোভের পরদিন সরকারের মুখপাত্র জানান, দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষপ্রয়োগের কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনের ইরানের উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউনেস পানাহি জানান, যেসব কেমিকেলের মাধ্যমে ছাত্রীদের বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে সেগুলো মিলিটারি গ্রেডের নয় এবং বাজারেও এগুলো কিনতে পাওয়া যায়।