ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে যোগদানের জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচনাকারীর এক আসামিকে মুক্তি দিলো রাশিয়া। দেশটির বিরোধী রাজনীতিবিদ বরিস নেমসভ হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাভোগ করছিলেন টেমেরলান এসকারখানভ নামের ওই আসামী। একটি চুক্তি স্বাক্ষরের পর তাকে কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১০ আগস্ট) এই তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত বার্তা সংস্থা তাস এবং সংবাদমাধ্যম আরআই নভোস্তি। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
পুতিনের সমালোচক ছিলেন বরিস নেমসভ। প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলতসিনের অধীনে সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে ক্রেমলিনের কাছে একটি সেতু পার হওয়ার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
২০১৭ সালে রাশিয়ার একটি আদালত নেমসভকে হত্যার জন্য ৫ জনকে ১১ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে টেমেরলান এসকারখানভও ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের সহযোগী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ১৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর একটি সূত্রের বরাতে তাস জানিয়েছে, ‘এসকারখানভ ২০২৪ সালের মার্চে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। তখন তাকে ক্ষমা করা হয় এবং কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।’
সূত্রটি আরও জানায়, ছাড়া পেয়ে ‘তিনি একটি অ্যাসল্ট ইউনিটে যান এবং বর্তমানে বিশেষ সামরিক অপারেশন জোনে যুদ্ধ মিশন পরিচালনা করছেন।’
তিনি আরও বলেন, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরে অস্বীকার করায় নেমসভের হত্যাকাণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা এখনও কারাগারে রয়েছেন।
এসকারখানভের মুক্তিকে ‘মৃত বন্ধুর স্মৃতির প্রতি অবজ্ঞা’ বলে অভিহিত করেছেন নেমসভের এক সময়কার মুখপাত্র ইলিয়া ইয়াশিন। গত সপ্তাহে রাশিয়া, বেলারুশ, যুক্তরাষ্ট্র এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের মধ্যে হাই-প্রোফাইল বন্দি বিনিময়ের আওতায় মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি।
হাজার হাজার রুশ বন্দি ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য স্বেচ্ছাসেবক হয়েছেন। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বেচে ফিরলে তাদের ক্ষমা করা হবে এমন চুক্তির আওতায় রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে রাজি হন তারা।
বন্দিদের নিয়োগের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে ওয়াগনার ভাড়াটে সেনারা পরিচালনা করেন। এই গোষ্ঠীর নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ব্যর্থ বিদ্রোহের পর ২০২৩ সালের আগস্টে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন।