মেরু ভাল্লুকের হামলায় প্রাণ গেছে মা ও তার এক বছর বয়সী শিশুর। আলাস্কায় এই জন্তু বিরল নয়। তবে বরফ ছেড়ে তারা লোকালয়ে সচরাচর আসে না। ফলে এই আক্রমণ বিরল বলেই মনে করা হচ্ছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) আলাস্কার ওয়েলস শহরের লোকালয়ে আচমকা ঢুকে পড়ে বড়সড় একটি মেরু ভাল্লুক। রাস্তায় সবার দিকে তেড়ে যাচ্ছিল এটি। হিংস্র জন্তুকে দেখে প্রাণভয়ে ছুটে পালাচ্ছিলেন বাসিন্দারা। এলাকায় রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। পরে স্থানীয় একটি স্কুলের সামনে এক মা ও তার শিশু ছেলেকে একা পেয়ে হামলে পড়ে ভাল্লুকটি। আক্রমণে দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে। তাদের মরদেহ পরে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য।
মৃতরা হলেন, সামার মায়োমিক ও তার ছেলে ক্লাইড অঙ্গটোয়াসরুক। ওয়েলস শহরের বেরিং স্ট্রেট ডিস্ট্রিক্ট স্কুলের সামনে এসে হামলা চালায় মেরু ভাল্লুকটি। রাস্তায় সে সময় যারা ছিলেন, তারা ঢুকে পড়েন স্কুলে। ছেলেকে নিয়ে মায়োমিক স্কুলে ঢুকতে পারেননি।
স্কুলের দরজাতেও ধাক্কা মারছিল ভাল্লুকটি। কিন্তু শক্ত করে দরজা বন্ধ করে রাখা হয়। পরে হিংস্র প্রাণিটিকে গুলি করে মারা হয়।
আলাস্কায় মেরু ভাল্লুকের এই হামলাকে গত ৩০ বছরের মধ্যে প্রথম বলা হচ্ছে। এর আগে সেখানে ১৯৯০ সালে মেরুভাল্লুকের হানায় মৃত্যু হয়েছিল। আলাস্কার যে এলাকায় মঙ্গলবার মেরু ভালুকটি তাণ্ডব চালায়, সেখানে ১৫০ মানুষের বসবাস। উত্তর আমেরিকার একেবারে উত্তর প্রান্তের এই অংশে লোকবসতি একেবারেই কম।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে মেরু ভাল্লুক লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। সাধারণত তারা বরফের মাঝে থাকে। কমবয়সী পুরুষ ভাল্লুকগুলো মানুষকে আক্রমণ করে থাকে। তবে তা বেশ বিরল। খাবার না পেয়ে ভাল্লুকটি লোকালয়ে এসেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
মেরু ভাল্লুক বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। অকারণে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তাদের হত্যা নিষিদ্ধ। তবে মানুষের প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা থাকলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মেরু ভাল্লুক মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।