অস্ট্রেলিয়া আগামী বছর থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমিত করার পরিকল্পনা করেছে। দেশটির সরকার মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। এর মাধ্যমে অভিবাসন বিষয়ে রাজনৈতিক চাপের মুখে দেশটির বহু কোটি ডলারের আন্তর্জাতিক শিক্ষা শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
তিনি পরিকল্পনা প্রকাশের সময় বলেন, ‘এর অর্থ হবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বছরের তুলনায় পরের বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমবে। অন্যদের ক্ষেত্রে বেশি হবে।’ এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আইনের প্রয়োজন হবে বলেও জানান তিনি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্রে বিদেশি শিক্ষার্থীরা ৪২ বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার (২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) অর্থনৈতিক মূল্য প্রদান করেছে।
ন বলেন, ২০২৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চশিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর নতুন সংখ্যা দুই লাখ ৭০ হাজারে সীমাবদ্ধ থাকবে।
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়া অর্থবছরে পাঁচ লাখ ৭৭ হাজারেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিসা মঞ্জুর করেছে।
ক্লেয়ার বলেন, এই পরিবর্তনের ফলে করোনা মহামারির আগে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা যেমন ছিল, আগামী বছর তেমন হবে। সরকার জানিয়েছে, ২০২৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক লাখ ৪৫ হাজার, অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩০ হাজার এবং কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য ৯৫ হাজার নতুন বিদেশি শিক্ষার্থী অনুমতি পাবে।
এদিকে ইউনিভার্সিটিস অস্ট্রেলিয়ার চেয়ার ডেভিড লয়েড বলেন, ‘আমরা সরকারের অভিবাসন সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের অধিকারকে স্বীকার করি।
কিন্তু এটি কোনো একটি খাতের ক্ষতির বিনিময়ে করা উচিত নয়, বিশেষ করে যেটি অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যেমন শিক্ষা।’ তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা খনিশিল্পের পর অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্প ছিল, যা গত বছর অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে অর্ধেকেরও বেশি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।
তিনি আরো বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আসা প্রতিটি ডলার অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফের বিনিয়োগ করা হয়। এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অর্থায়নের ব্যবধান বাড়বে, একই সঙ্গে সহায়তার প্রয়োজনও বৃদ্ধি পাবে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ এই মাসে শিল্পটিকে অস্ট্রেলিয়ার জন্য ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
তবে তিনি এ-ও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়, কারণ এর অভিবাসন সম্পর্কিত প্রভাব রয়েছে।
এ ছাড়া শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার আন্তর্জাতিক শিক্ষা শিল্পকে দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে রক্ষার পরিকল্পনা করছে, যারা এটিকে শোষণ করার চেষ্টা করে। সম্প্রতি দেড় শতাধিক ‘ভূতুড়ে কলেজ’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি, যেগুলো আসলে শিক্ষার জন্য নয়, বরং অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করার জন্য লোকদের পরোক্ষভাবে সুযোগ দেয়।