মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পাঠানো এক চিঠিতে রাইসিন নামক এক মারাত্মক বিষাক্ত পদার্থ মেশানো ছিল। তবে তা ট্রাম্পের হাতে পৌঁছানোর আগেই জব্দ করা হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়, হোয়াইট হাউসে কোনো চিঠি পৌঁছানোর আগে তা আলাদা কার্যালয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ওই কার্যালয়ে ট্রাম্পকে পাঠানো একটি চিঠি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাতে রাইসিনের অস্তিত্ব মেলে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা জানিয়েছে, চিঠিটির খামের রাইসিন নামক এক মারাত্মক বিষাক্ত পদার্থ মেশানো ছিল।
ল্যাব পরীক্ষাতেও ট্রাম্পকে পাঠানো চিঠিতে রাইসিনের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এবং প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিস তদন্ত করে দেখছে চিঠিটি কোথা থেকে এসেছিল। এ ধরনের চিঠি অন্য কাউকে পাঠানো হয়েছে কিনা সেটিও তদন্ত করে দেখছে তারা।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সিএনএনকে জানিয়েছে, তারা এ চিঠির পাঠানোয় আপাতত কোনো ধরনের ঝুঁকি দেখছেন না। আর মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেশটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন চিঠিটি কানাডা থেকে পাঠানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গতকাল শনিবার কানাডার পক্ষে দেশটির পুলিশ বলেছে, তারা এ চিঠির বিষয়ে তদন্তে এফবিআই এর সঙ্গে কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রে এর আগেও হোয়াইট হাউসকে উদ্দেশ করে রাইসিন মেশানো চিঠি পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও অন্যান্য কয়েকজন কর্মকর্তাকে রাইসিনের গুঁড়া মেশানো চিঠি পাঠানোর দায়ে ২০১৪ সালে মিসিসিপির এক ব্যক্তিকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তার চার বছর পর ২০১৮ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন ও হোয়াইট হাউসে একই ধরনের চিঠি পাঠানোর জন্য একজন সাবেক সেনা সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়।
ভেন্না বীজ থেকে তৈরি হয় মারাত্মক বিষ রাইসিন। এ বীজ থেকেই তৈরি হয় ক্যাস্টল ওয়েল। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, রাইসিন এতটাই বিষাক্ত যে মাত্র কয়েক ফোটা লবণ দানার পরিমাণ রাইসিন একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটাতে পারে। রাইসিন কোনোভাবে খেয়ে ফেললে, নিঃশ্বাসের সঙ্গে অথবা ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে মাথা ঘোরা, বমি শুরু হয়। এরপর শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হতে থাকে।
রাইসিনের পরিমাণ অনুসারে ৩৬ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিষটি প্রবেশ করা ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। আর মারাত্মক এ বিষটির বিষক্রিয়া প্রতিরোধে কোনো প্রতিষেধক নেই। সিডিসি বলছে, রাইসিন দিয়ে তৈরি গুড়ো ও স্প্রে অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করা সম্ভব।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন