সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে এই অভিযান শুরু হয়। এরই মধ্যে শুক্রবার ৩০তম দিনে গড়িয়েছে রুশ অভিযান। বিগত ২৯ দিনে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি নগরী দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী।
দেশের এই পরিস্থিতিতে সীমান্ত অতিক্রম করে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ করার সময় নগদ ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ১.৩ মিলিয়ন ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৫৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা) নিয়ে ধরা পড়লেন ইউক্রেনের বিতর্কিত রাজনীতিবিদ ইগর কোটভিটস্কির স্ত্রী আনাস্তাসিয়া কোটভিটস্কা।
ডলার এবং ইউরো মিলিয়ে এই বিপুল অর্থ ইউক্রেন থেকে পাচার করা হয়েছে বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। আনাস্তাসিয়া ইউক্রেনের বিশিষ্ট বিত্তশালী তথা বিতর্কিত সাবেক এমপি ইগর কোটভিটস্কির স্ত্রী। টাকা পাচার করার সময় তা হাঙ্গেরির আবগারি দফতরের নজরে পড়ে।
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পাচারের চেষ্টা করার জন্য আনাস্তাসিয়ার বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের স্থানীয় একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ইগর জানান, তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য দেশ ছাড়ছিলেন তিনি। তবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেন ইগর।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার আগে ইগর বলেন, “আমার সমস্ত টাকা ইউক্রেনের ব্যাংকেই আছে। আমি কিছুই বের করিনি।”
ইগরের প্রথম পক্ষের মেয়েও এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তবে আনাস্তাসিয়া অভিযোগ নিয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্য করেননি। এদিন আনাস্তাসিয়া বিতর্কিত নিজের মা এবং হাঙ্গেরির অন্য দুই পুরুষের সঙ্গে ভ্রমণ করেছিলেন বলেও জানা গেছে।
আনাস্তাসিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইউক্রেনের ভিলক চেকপয়েন্ট দিয়ে প্রস্থান করার সময় এই বিপুল পরিমাণ টাকার কথা জানাননি। কিন্তু পরে হাঙ্গেরিতে পৌঁছে টাকা নিয়ে আসার কথা জানান।
ইউক্রেনে ইতোমধ্যেই গুজব উঠেছে, কিয়েভ-মস্কো সংঘাতের আবহে ইউক্রেনের বিত্তশালীরা নিজেদের অর্থ নিয়ে বিদেশে পালাতে চাইছেন।
ইগর ইউক্রেনের পারমাণু শক্তি দ্বারা চালিত ব্যবস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন। তাছাড়াও তিনি ইউক্রেনের ইউরেনিয়ামের মজুত করার বিভিন্ন বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু বর্তমানে রাশিয়া এই মজুতের বেশ খানিকটা দখল করে নিয়েছে।
ইউক্রেনের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর্সেন অ্যাভাকভের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক আছে।
ভিলক চেকপয়েন্টের সীমন্তরক্ষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানো হবে বলেও জানা গেছে। কারণ মনে করা হচ্ছে যে, টাকা পাচার করার বিষয়ে তারা অবগত ছিলেন।