যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে স্মরণকালের ভয়াবহ হারিকেন মিল্টন। এর প্রভাবে সৃষ্ট টর্নেডো, বন্যা এবং ঝড়ের কবলে পড়ে অঙ্গরাজ্যটিতে কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়বে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ফ্লোরিডা ডিপার্টমেন্ট অফ ল এনফোর্সমেন্ট বিবিসির ইউএস নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজকে এই মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
ভারী বৃষ্টিপাত, ঝোড়ো বাতাস ও প্রাণঘাতী জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতার মধ্যে গত বুধবার রাতে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানে ঝড়টি। সামুদ্রিক ঝড় হ্যারিকেন মিল্টনের তাণ্ডবে ইতোমধ্যেই ফ্লোরিডার ৩২ লাখেরও বেশি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে।
অঙ্গরাজ্যটির গভর্নর রন ডিসান্টিস বলেছেন, আগামী দিনগুলোতে আরও বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মিল্টনের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে না যাওয়ার জন্য ফ্লোরিডার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে।
পশ্চিম উপকূলে সেন্ট পিটার্সবার্গে পানি সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। সেখানে একটি ক্রেন একটি সংবাদপত্র ভবনে আছড়ে পড়েছে এবং একটি মেজর লীগ বেসবল স্টেডিয়ামের ছাদ উড়ে গেছে।
তাণ্ডব চালানোর পর মিল্টন আটলান্টিকের দিকে চলে গেছে। কিন্তু অঙ্গরাজ্যের অনেক অংশ প্লাবিত হয়েছে এবং কিছু লোককে নৌকায় করে উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গেছে, ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলে সারাসোটা কাউন্টির সিয়েস্তা কি-তে ঘণ্টায় ১২০ মাইল বেগে হামলে পড়া ৩ নম্বর ক্যাটাগরি হারিকেন মিল্টনের আঘাতে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন উপকূলবর্তী এলাকার ৩০ লাখের বেশি বাসিন্দা। অনেক ঘরবাড়িও বিধ্বস্ত হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের তথ্য পর্যবেক্ষক পাওয়ারআউটেজ ডট ইউএস।
ফ্লোরিডা জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কেভিন গুথরি বলেছেন, হারিকেনটি স্থলভাগে আঘাত হানার আগেই প্রায় ১২৫টি বাড়ি লন্ডভন্ড করে দেয়। এর মধ্যে অনেকগুলো বাড়ি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য তৈরি করা।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানায়, বুধবার রাতে স্থলভাগে আঘাত হানে হারিকেনটি। এসময় কিছুটা দুর্বল হয়ে ২ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় মিল্টন। এটির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ মাইল (১৭৫ কিলোমিটার), যা ঘণ্টায় ১৬ মাইল (২৬ কিলোমিটার) বেগে পূর্ব ও উত্তর–পূর্বে অগ্রসর হচ্ছিল।