আগামী বছরের হজে অংশ নিতে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছেন ২৫ বছর বয়সী উসমান আরশাদ। সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় পৌঁছতে পাঁচ হাজার চার শ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিতে হবে পাকিস্তানি এ তরুণকে। পাঞ্জাব প্রদেশের ওকারা শহর থেকে যাত্রা শুরু করেন তিনি।
সৌদি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ সূত্রে জানা যায়, উসমান আরশাদ ইরান, ইরাক, কুয়েতসহ পাঁচটি দেশ পাড়ি দিয়ে সৌদি পৌঁছবেন।দীর্ঘ এ যাত্রায় তাঁর আট মাসের মতো সময় লাগতে পারে। তাঁর সঙ্গে রয়েছে ব্যাকপ্যাক, ছাতা ও একজোড়া ট্রেকিং জুতা।
আরশাদ বলেন, ‘আমি পাকিস্তান থেকে ইরান, ইরান থেকে ইরাক, ইরাক থেকে কুয়েত এবং কুয়েত থেকে সৌদি আরবে প্রবেশ করব। এ সপ্তাহের শেষ দিকে ইরানে প্রবেশ করব। এতে প্রায় আট মাস সময় লাগবে। আগামী মে মাসে আমি মক্কায় পৌঁছার আশা করি। ’
গত বছর আরশাদ হেঁটে ৩৪ দিনে ‘শান্তিপূর্ণ পাকিস্তানের প্রচারণা’র অংশ হিসেবে ওকারা অঞ্চল থেকে চীন সীমান্তের খুঞ্জেরাব পাস পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ২৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন। মূলত তখন থেকেই হেঁটে হজ যাত্রার কথা তাঁর প্রথম ভাবনায় আসে। তিনি বলেন, ‘গত বছরের ভ্রমণ শেষে আমার ভাবনায় আসে যে আমি যদি হেঁটেই পাকিস্তানের ভেতরে এতটা পথ চলতে পারি তাহলে আমার সেই স্থানে যাওয়া উচিত, যেখানে যেতে সব মুমিন আশা করে। অতঃপর স্বপ্নের যাত্রা বাস্তবায়নে আমি পথচলা শুরু করি। ’
পুরো সফরের প্রস্তুতি নিতে প্রায় ৯ মাস সময় লেগেছে। পুরো যাত্রার ব্যয় নির্বাহে প্রায় সাত হাজার ডলার সঞ্চয় করে উসমান আরশাদ। পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও ভিসা সংগ্রহ ছাড়াও তাঁর জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ৪৫ কিলোমিটার হাঁটবেন এবং রাতে মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা স্থানীয়দের বাসায় অবস্থান করবেন বলে জানান তিনি। যাত্রাবিরতিকালে তাঁকে সবাই উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়। সবাই তাঁর হজযাত্রা সম্পর্কে গল্প শুনতে চায় এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চায়।
দীর্ঘ পথচলার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাচ্ছে উসমান আরশাদের জীবন পরিকল্পনা। তিনি ওকারা ইউনিভার্সিটিতে মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করেন। তিনি বলেন, ‘আগে মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু এখন আমার পরিকল্পনা হলো পায়ে ভ্রমণ করা এবং মানুষের সঙ্গে বিভিন্ন দেশ নিয়ে কথা বলা। ’