কয়েক বছর ধরে পুলিশের নজর এড়িয়ে আসছিলেন ভারতের রাজধানী দিল্লির ‘লেডি ডন’ জোয়া খান। তবে অবশেষে পুলিশের স্পেশ্যাল সেলের হাতে ধরা পড়েছেন তিনি। পুলিশের দাবি, তাকে ২৭০ গ্রাম হেরোইনসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি রুপি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দিল্লির কুখ্যাত গ্যাংস্টার হাশিম বাবার তৃতীয় স্ত্রী হলেন জোয়া খান। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি পুলিশের নজরে ছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে সরাসরি মাদক কারবারের কোনও প্রমাণ না থাকায় গ্রেপ্তার করা যাচ্ছিল না।
জানা গেছে, গ্যাংস্টার হাশিম বাবা বর্তমানে জেলে বন্দি। তার বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি ও চোরাচালানসহ ১২টিরও বেশি মামলা রয়েছে। তবে তার অনুপস্থিতিতে পুরো গ্যাং পরিচালনার দায়িত্ব নেন জোয়া। পুলিশ জানায়, জোয়া এত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতেন যে, তার বিরুদ্ধে অবৈধ কর্মকাণ্ডের কোনো শক্ত প্রমাণ জোগাড় করা যাচ্ছিল না।
জানা যায়, হাশিমের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর ২০১৭ সালে তাকে বিয়ে করেন জোয়া। দু’জনেই উত্তর-পূর্ব দিল্লির বাসিন্দা এবং প্রতিবেশী ছিলেন। সেই সূত্র ধরে আলাপ, প্রেম, এরপর বিয়ে। মাদক ব্যবসায় তার সম্পৃক্ততার পেছনে আলোচিত মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের বোন হাসিনা পার্কারের ভূমিকা রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
বিলাসবহুল জীবন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা
পুলিশ জানায়, মাদক ব্যবসা চালালেও জোয়া তার উচ্চবিত্ত ভাবমূর্তি বজায় রাখতেন। তিনি বিত্তবান ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন, দামি পার্টিতে যেতেন এবং বিলাসবহুল পোশাক ও গয়নায় নিজেকে সাজিয়ে রাখতেন। এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি বেশ জনপ্রিয় এবং তার বহু অনুসারী রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই জোয়াকে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছিল দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল। কিন্তু নানা কৌশলে তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। অবশেষে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে অভিযান চালিয়ে মাদকসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জোয়ার পরিবারও অপরাধ জগতে জড়িত। জানা গেছে, ২০২৪ সালে তার মা যৌনচক্র চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হন এবং বর্তমানে জামিনে মুক্ত। এছাড়া, তার বাবাও মাদক কারবারের সঙ্গে যুক্ত।
উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সক্রিয় হাশিম বাবা গ্যাং অন্যতম ভয়ঙ্কর অপরাধী সংগঠন হিসেবে পরিচিত। তবে লেডি ডন জোয়ার গ্রেপ্তারের পর এই গ্যাংয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।